মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি খেলনা পিস্তল, পিস্তলের কভার, র্যাব লেখা দুটি জ্যাকেট, র্যাবের চারটি ভুয়া আইডি কার্ড, নৌবাহিনীর একটি পোশাক, একটি চাকু ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়।
আটকেরা হলেন- নৌবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত ও এই দলের মূলহোতা নাজমুল হোসেন, নাহিদ হাসান এবং দলের সদস্য তাজুল ইসলাম, সুমন মিয়া ও সুচিত্র রবিদাস।
জানা যায়, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নৌ-বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন নাজমুল হোসেন ও নাহিদ হাসান। পরে নিজেরা গড়ে তুলেছিলেন র্যাবের একটি ভুয়া দল। প্রতারণা করতে নিজেরা বানিয়ে নেন র্যাবের পোশাক। সঙ্গে রাখতেন খেলনা পিস্তল ও নৌবাহিনীর পোশাক। র্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল চক্রটি। বিশেষ করে রাজধানীতে জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসা, বাড়ি দখল ও ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ হাতিয়েছে নিচ্ছিল তারা।
সহকারী পরিচালক নোমান আহমদ জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার বড়বাড়ি এলাকার শহীদ জহুরুল ইসলাম রোডের বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের আট তলা বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলার পূর্ব পাশের রুমে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ওই পাঁচজনকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে ২টি খেলনা পিস্তল, ২টি পিস্তলের কভার, ২টি র্যাব জ্যাকেট, ৪টি ভুয়া র্যাব আইডি কার্ড, ১টি নৌ বাহিনীর ইউনিফর্ম, ৩টি ফরমেশন সাইন, ১টি চাকু, ১টি ল্যাপটপ, ৫টি ম্যানিব্যাগ, ৪টি ব্যাংক চেক, ১টি ৫ লাখ টাকার চেক, ৮টি মোবাইল ফোন, নগদ ৩ হাজার ৭০০ টাকা, ১টি টেন্ডার তদারকির নথি এবং জমিজমা ও টাকা উদ্ধার সংক্রান্ত দলিল/স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা নিজেদের র্যাব পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। অর্থের বিনিময়ে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সালিশের রায় নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসত। এই চক্রটি জমি ও টাকা উদ্ধার, বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি খাতের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সকালে আটক করায় তাদের সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। প্রতারক চক্রটির দুইজন নৌবাহিনী থেকে গত বছর চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এই দলের বাকি সদস্যরা আগে থেকেই বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের কাছ থেকে যে টেন্ডারের কাগজ পেয়েছি সে বিষয়ে জানতে পেরেছি- সাধারণ মানুষকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে আশ্বস্ত করছিল এবং টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এছাড়া প্রতিনিয়ত র্যাব পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।
ভোরের পাতা/কে