প্রকাশ: রোববার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:৩১ পিএম আপডেট: ১৯.১২.২০২১ ৭:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
যেখানে নাচ-গান আর হৈহুল্লার পরিবর্তে এক ভিন্ন আয়োজন করেছেন কনের বাবা। রবিবার সকালে মোংলা উপজেলা চিলা ইউনিয়নে বিবাহের অনুষ্ঠানে কোরআন তেলওয়াতের আয়োজন করে নজির বিহীন দৃষ্টি স্থাপন করলেন বাবা আবু সাইদ।
খবর নিয়ে জানা যায়, মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি ৯নং ওয়ার্ডের আবু সাইদ শেখের বড় মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১৯) এর সাথে ঐ একই গ্রামের জাহাঙ্গীর ফরাজির পুত্র হাফেজ মোঃ রিয়াজের (২৪) এর বিয়ের অনুষ্ঠানে গান বাজনা না বাজিয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৩০ জন এতিম শিশু ছাত্রদের দাওয়াত দিয়ে কোরআন তেলওয়াতের ব্যবস্থা করেছেন কনের বাবা আবু সাইদ। এতে এলাকার মানুষেরা মাঝে অন্য রকম অনুভূতি দেখা দিয়েছে।এলাকার মানুষের কাছে প্রসংশায় ভাসছে কনের বাবা। অপসংস্কৃতি বাদ দিয়ে ইসলামি সংস্কৃতি ফিরে আসবে বলে মনে করেন এলাকার সাধারন মানুষ। জয়মনি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ নুরে আলম বলেন, বিয়ে একটি সর্বজন স্বীকৃত সবচেয়ে পবিত্র এবং সামাজিক বন্ধন। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণী সমাজের এবং ধর্মীয় রীতিনীতি সমাজের এবং পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। প্রায় প্রত্যেক ধর্মে বিয়ের সম্পর্কে আলোচনা ,বাণী দেওয়া হয়েছে। ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা যেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই ছেলেমেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা স্পষ্ট করে বলছেন।বিয়ের মাধ্যমে দুইজন ব্যক্তি সংসার শুরু হয়। তাই বর্তমান সমাজে বিয়ে বাড়ী সাধারনত নাচ-গান আর অন্য রকম আয়োজনের মধ্যেই দিনটি অতিবাহীত করার কথা কিন্ত কনের বাবার পক্ষ থেকে যে কোরআন তেলওয়াতের আয়োজন করা জলো এটা প্রশংসনীয়। আমরা চাই এই রেওয়াজ যদি সব জায়গায় ছড়িয়ে পরে তবে সমাজের বেহায়াপনা আর থাকবেনা বলে মনে করেন হাফেজিয়া মাদ্রাসার এ শিক্ষক।
কনের বাবা আবু সাইদ বলেন, আমার মেয়ে সাদিয়া আক্তারের সাথে জাহাঙ্গীর ফরাজির পুত্র হাফেজ মিরাজের সাথে গত দের মাস আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ের প্রথম রিতী কাবিন করে রাখা হয়েছিল। আজ ১৯ ডিসেম্বর রোববার ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একজন হাফেজ স্বামীর হাতে আমার আদোরের মেয়েকে তুলে দিচ্ছি। আর এ জন্যই আমি অন্য কোন আয়োজন না করে আল্লাহর এ কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমরা বিপদে পরলে যেখানে আল্লাহকে ডাকি এবং সে বিপদ থেকে আল্লাহ ছাড়া কেউ রক্ষা করার থাকেনা তাই আমি বিশ্বাস করি এতে আমার মেয়ের সংসার জীবন অনেক সুখে ও সাচ্ছন্দ্যে সুখের হবে ইনশাআল্লাহ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল রহমান মল্লিক বলেন, আমার ওয়ার্ডে এমন একটি আয়োজনের কারনে আমি আসলেই খুব আনন্দিত। আমার প্রতিবেশী আবু সাইদের এমন আয়োজন আসেই প্রশংসার দাবিদার।
ব্যাতিক্রমী এ বিয়ে ব্যাপারে চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন জানান, বিয়ের প্রথম থেকেই আমি সব কিছু যানি।কাবিনের সময়ও আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। মেয়ের বাবা আবু সাইদ একজন নামাজি ও ভালো মনের মানুষ। আর এ জন্যই তার এমন কোরআন খতমের আয়োজন। আর আমি এ আয়োজনে ব্যাক্তিগত ভাবে খুব খুশী। আমার ইউনিয়নে এর আগে এমন কোন আয়োজন হয়নি। এ ব্যাক্তিক্রমি আয়োজনের জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই এবং বর-কনের দাম্পত্ত জীবন যেন আল্লাহ সুখে মান্তিতে রাখর এ কামনাই করছি।