ফিলিপাইনে এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে কমপক্ষে ৭৫ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে বহু মানুষ।বিধ্বস্ত দ্বীপগুলোতে নিরাপদ পানি ও খাবার সরবরাহের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফিলিপাইনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় টাইফুন রাইয়ের তাণ্ডবের পর নিহতের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে প্রথমে ১২ এবং পরে ৩৩ বলে জানানো হয়েছিলো। পরে সেটি একলাফে কমপক্ষে ৭৫ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ঘূর্ণিঝড় অনেক এলাকার যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়,বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে, কংক্রিটের বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে দেয় এবং গ্রামগুলিকে প্লাবিত করে। এছাড়া টাইফুন রাই আতঙ্কে বাড়ি-ঘর এবং সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টগুলো থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে গেছেন প্রায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়েছিলো, গত বৃহস্পতিবার সিয়ারগাও দ্বীপে আছড়ে পড়া রাই ছিলো মূলত ‘সুপার টাইফুন’। ওই সময় ওই দ্বীপে বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার (১২০ মাইল)। আর শুক্রবার সকালে বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।
ফিলিপাইনের বহল অঞ্চলের গভর্নর আরথার ইয়াপ নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে জানিয়েছেন, তার এলাকার শহরগুলোর মেয়রদ্বয় ৪৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে করে টাইফুনের আঘাতে নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ জনে।
আরথার ইয়াপ জানান, তার এলাকায় এখনও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া রাইয়ের তাণ্ডবে আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। তিনি বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও কার্যত বিচ্ছিন্ন। আমার এলাকার ৪৮ জন মেয়রের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২১ জনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পেরেছি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
এদিকে টাইফুনের আঘাতে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে হতাহতদের খোঁজে তল্লাশি এবং আটকে পড়াদের উদ্ধারে কার্যক্রম জোরদার করেছে ফিলিপিনো প্রশাসন। এ কাজে সামরিক বাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের হাজার হাজার সদস্যকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
সামরিক বাহিনীর শেয়ার করা বিমান থেকে তোলা একটা ছবিতে দেখা গেছে জেনারেল লুনার সিয়ারগাও শহরে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেখানে বড়দিনের আগে অনেক সার্ফার এবং ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকরা ছিলো। সেখানকার ভবনগুলোর উড়ে গেছে এবং ধ্বংসাবশেষ মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছিল।
ফিলিপাইন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে একটি। প্রতি বছর গড়ে ২০ টি ঝড় এবং টাইফুনের দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হয়, যা সাধারণত ইতিমধ্যে দরিদ্র এলাকায় ফসল, বাড়ি ঘর এবং অবকাঠামো মুছে দেয়।