বগুড়ার শেরপুরে যাত্রীবাহী দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০জন। তাদেরকে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহত ওই বাস চালকের নাম নুরুল ইসলাম (৫০)। তিনি দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার নিউ টাউন এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে।
শনিবার ভোররাতে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের সেরুয়া বটতলা বাজার নামক স্থানে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। সেইসঙ্গে মহাসড়কের মধ্যে আড়াআড়িভাবে উল্টে পড়ে থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় মহাসড়কের উভয়পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অসংখ্য যানবাহন আটকে থাকে। তবে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী সূর্য পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের সেরুয়া বটতলা বাজার নামক স্থানে পোঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাস দুটির অধিকাংশ যাত্রী গুরুতর আহত হন। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক তাদেরকে বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বেলা সাড়ে নয়টার দিকে শ্যামলী পরিবহন বাসের চালক নুরুল ইসলাম মারা যান।
শেরপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা নাদির হোসেন জানান, দুর্ঘটনায় আহত ১০জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে এবং গুরুতর আহত ২০জনকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- শ্রী প্রদীপ কুমার সাহা (৫২), মোছা. রাজিয়া সুলতানা (২৫), সুমা আক্তার (৮), দেলোয়ার হোসেন (২৯), রাশিদা বেগম (২৫), রুবি আক্তার (৮), শারমিন আক্তার (৩০), সাইদুল ইসরাম (৪৭), তালহা হোসেন (১৯), উম্মে সালমা (১৮), মেহেদী হাসান (৩০), এনামুল হক (৩৫), নুরী বেগম (৪০), আলমগীর হোসেন (৩৬), হোসেন আলী (৩৭), আব্দুল করিম (৩৪), মোমিনুল ইসলাম (২২)। এদের সবার বাড়ি রংপুর, গাইবান্ধা, গাজীপুর ও জামালপুর জেলায়। আর দুর্ঘটনায় আহত বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বানিউল আনাম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটি জব্দ করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া মহাসড়কের মধ্যে পড়ে থাকা বাস দুটির কারণে সামান্য সময়ের জন্য যানজনটের সৃষ্টি হয়। তবে কিছু্ক্ষণ পর বাসগুলো সরিয়ে নেওয়ায় যান চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এই ঘটনায় শেরপুর থানায় একটি মামলা করা রয়েছে বলে জানান তিনি।