#আমাদের বিজয়ের চেতনার এক ও অনন্য: ড. ওয়ালি-উর রহমান। #বিজয় দিবস আমাদের জন্য ঐতিহাসিক একটি দিন: ডা. শারমিন রহমান অমি।
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের গতকাল ছিল বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিসব। বছর ঘুরে ফিরে প্রতি বছরেই আমাদের মাঝে এই দিনটি আসে। আমাদের জন্য এই দিনটি অনেক ঐতিহাসিক একটি দিন। এই দিনটিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে মেতে উঠেছে গোটা বাঙালি জাতি। আমাদের যে বিজয়ের চেতনা রয়েছে তার মূল শক্তি হলও আমাদের জাতি পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু অসহিংস আন্দোলনের মাধ্যমেই একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৫৬তম পর্বে শুক্রবার এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালি-উর রহমান, শেরপুর সদরে মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি), সেন্ট্রাল কাউন্সিলর বি এম এ ডা. শারমিন রহমান অমি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. ওয়ালি-উর রহমান বলেন, আজকের সংলাপের আলোচ্য বিষয় বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ। আসলে এই যে চেতনা সেটার সাথে জাতিসঙ্গের যে আরও ১৯২টি দেশ রয়েছে সেসব দেশ যেভাবে স্বাধীন হয়েছে এবং আমাদের দেশ যেভাবে স্বাধীন হয়েছে সেখানে আমাদের চেতনার সঙ্গে সেসব দেশের স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে কোন ভাবে মিলানো সম্ভব না কারণ আমাদের বিজয়ের চেতনার এক ও অনন্য। আমাদের যে বিজয়ের চেতনা রয়েছে তার মূল শক্তি হলও আমাদের জাতি পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু অসহিংস আন্দোলনের মাধ্যমেই একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণার পূর্বে তাঁর নির্দেশেই বাংলাদেশের সবকিছু পরিচালিত হচ্ছিল। এই দিক থেকে তিনি বিশ্ব বিখ্যাত অনেক নেতা থেকে ভিন্ন। ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য তিনি পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ গড়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, তা বঙ্গবন্ধুর জন্যই সম্ভব হয়েছে। সমগ্র জাতি দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান বুকে ধারণ করে এবং হৃদয়ে বিশ্বাস স্থাপনের মধ্য দিয়ে মরণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিপাগল বাঙালির রক্তের বন্যায় ভেসে যায় পাকিস্তানের দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত দু’লক্ষাধিক হানাদার বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞ, জ্বালাও-পোড়াও অভিযান ‘অপারেশন সার্চলাইট’। প্রায় এক কোটি মানুষের ভারতে আশ্রয় গ্রহণ এবং মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দান, রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহ ও কূটনৈতিক সমর্থন এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধেই পৃথিবীর মানচিত্রে আর একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের জন্ম হয়, সেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জীবনভর সংগ্রামের ফলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। স্বাধীনতার পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আত্ননির্ভশীল, স্বয়ংসম্পূর্ণ, মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।
ডা. শারমিন রহমান অমি বলেন, আমাদের গতকাল ছিল বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিসব। বছর ঘুরে ফিরে প্রতি বছরেই আমাদের মাঝে এই দিনটি আসে। আমাদের জন্য এই দিনটি অনেক ঐতিহাসিক একটি দিন। এই দিনটিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে মেতে উঠেছে গোটা বাঙালি জাতি। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বন্যায় এবং ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত আব্রুর বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন এই বাংলাদেশ। পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল থেকে গৌরব ও অহংকারের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যা, ধ্বংস ও পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে ৯ মাসের মরণপণ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের, জন্ম হয় লাল-সবুজ পতাকার। একসময় সদ্য জন্ম নেওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশটিকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যা দিলেও এখন বলা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে সেই দেশটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বেড়েছে শিক্ষার হার, গড়ে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান। অধিকাংশ অবকাঠামো যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধেরও ব্যাপক পরিবর্তন সাধন হয়েছে। বাস্তবায়িত হয়েছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনায় বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। যার সুফল ভোগ করছে দেশের আপামর মানুষ।আমাদের বিজয়ের আরও একটি আনন্দ হচ্ছে আমাদের জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার এই চরম সংকটকেও তিনি দেশকে নিজের সুদক্ষ নেতৃত্বে সামাল দিয়েছেন। যা বাঙালিকে শুধু অর্থনৈতিক মুক্তির পথে নয় বরং আরও তরান্বিত করেছে আমাদের অর্থনীতিকে। বিজয়ের এই ৫০ বছরে সময়ের আরেক সাফল্য হলো, দেশের যুদ্ধাপরাধী এবংজাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন কিন্তু তার 'সোনার বাংলা' গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।