সমুদ্রের অমিত সম্ভাবনা আমাদের কাজে লাগাতে হবে: ড. সন্তোষ কুমার দেব
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি এবং একই সাথে আমরা স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। সেখানে আজকে আমরা এমন একটা সময় উদযাপন করছি যেখানে আজকের ভোরের পাতা সংলাপের এমন একটি বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে যেটা সত্যি সাড়া বিশ্বের মানুষ স্বীকার করছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিতার স্বপ্নকে হৃদয়ে লালন করে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য। গত ১২ বছরে তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছেন। বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে, উন্নয়নের এই গতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৫৫তম পর্বে বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সামরিক গবেষক মে. জে. (অব.) আব্দুর রশিদ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, জার্মান দূতাবাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট, ফর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ কুমার দেব। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, আজ আমরা এমন একটি মাহেন্দ্রক্ষণে আছি যেখানে আমরা মুজিব শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পালন করছি। আমি প্রথমেই আজকের এই দিনে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমরা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে তাঁর পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাতবরণ করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ ইজ্জতহারা মা-বোনদের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছিলেন, “তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব- এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।” এইযে একটা ভাষণের উপর ভিত্তি করে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি সেদিন মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল যার ফলে আজকের এই বিজয়ের দিনটি আমরা উদযাপন করতে পারছি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করলেও শেষ করতে পারেননি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিজয়ের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। শুরু হয় একাত্তরের পরাজিত শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন। ২১ বছর বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিলেন বঙ্গবন্ধু, চেষ্টা হয়েছে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রত্যয় নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন। কিন্তু ২১ বছর জমে থাকা জঞ্জাল সরাতেই কেটে যায় তার অনেকটা সময়। এই সময়ে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার করছেন। সবচেয়ে বড় যে কাজটা করেছেন, তা হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। কিসিঞ্জারের কল্পনার তলাবিহীন ঝুড়ি তো নয়ই, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এখন সক্ষমতায়, মর্যাদায়, সামর্থ্যে সবার বিস্ময়। দেশে শিক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতি, অবকাঠামোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রকে উন্নয়নের এক মহাসড়কে নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে খাদ্য নিরাপত্তা, সমুদ্র বিজয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মানসিকতা, দূরদর্শিতা ও মানবিক গুণাবলি তাকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার, বিশ্বের অনগ্রসর দেশ ও জাতির আদর্শ শেখ হাসিনা আজ দক্ষ নেতৃত্বের রোল মডেল। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সব আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তার হাত ধরেই বাঙালি জাতি এক ও অভিন্ন সত্তায় গড়ে উঠছে।