প্রকাশ: বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ইতিহাস গবেষণা বিষয়ক বৃটেনের বিশ্বখ্যাত সংগঠন রয়াল হিস্টোরিকাল সোসাইটি (আরএইচএস) তার দেড়শো বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অ্যাসোসিয়েট ফেলোশিপ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ১৮৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটিতে সম্প্রতি সম্মানজনক অ্যাসোসিয়েট ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাস গবেষক ও সাংবাদিক মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান। আরএইচএস তাকে `ওয়ান অফ দি ফার্স্ট’ বা অগ্রগামী অ্যাসোসিয়েট ফেলো হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গত ২৬ নভেম্বর ২০২১ সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভায় ফেলোশিপ এবং সদস্যপদের মধ্যবর্তী অ্যাসোসিয়েট ফেলোশিপের ক্যাটেগরি সৃষ্টি করা হয়। এক ইমেইলে মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামানকে অ্যাসোসিয়েট ফেলো হওয়ার প্রস্তাব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এমা গ্রিফিন। আরএইচএস ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে রেজিস্ট্রিকৃত এবং রয়াল চার্টারের মাধ্যমে অনুমোদিত সংগঠন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচিত ইতিহাসপ্রেমী স্কলাররা এর সদস্য এবং ফেলো।
পিপল’স হিস্ট্রি বা গণমানুষের কাছে ইতিহাসকে জনপ্রিয় করা বিশেষ করে বাংলার গৌরবময় ইতিহাসকে ছড়িয়ে দিতে দেড় দশকেরও বেশি সময় নিয়ে কাজ করছেন মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান। তিনি ইতিহাস ভিত্তিক সংগঠন রুটস হিস্ট্রি অ্যান্ড ফোকলোর রিসার্চ সোসাইটি প্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাস গবেষণা ও তথ্যমূলক জার্নাল রুটস প্রকাশ করেন। শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সী মানুষের কাছে বাংলার গৌরবময় ইতিহাসকে তিনি তুলে ধরছেন আকর্ষণীয় প্রেজেন্টেশন ও সহজ ভাষায়। এই কাজে তিনি কোনো ধরনের পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন না। ইতিহাস বিষয়ক তার অনেক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এনসাইক্লোপিডিয়া হিসেবে পরিচিত বাংলাপিডিয়া-র অন্যতম কন্ট্রিবিউটর। ২০০৮ সালে তার ইতিহাস গবেষণামূলক কাজকে উৎসাহিত করে আমেরিকা ভিত্তিক বিশ্বখ্যাত আরেক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি।
পেশায় সাংবাদিক এবং সাপ্তাহিক বিপরীত স্রোত সম্পাদক মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থা থেকে দীর্ঘসময় কাজ করেছেন পাঠকপ্রিয় সাপ্তাহিক ও পরবর্তীতে দৈনিক যায়যায়দিন ও আরো কয়েকটি পত্রিকায়। টিভি, রেডিও, অনলাইন ও প্রিন্ট সব মাধ্যমেই কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। কলেজ জীবন থেকে তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত যা তার গবেষণামূলক কাজের ভাবনাকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর পূর্তি নিয়ে সম্প্রতি আলোচিত `পঞ্চাশে স্বপ্নের বাংলাদেশ’ বইয়ের তিনি প্রকাশক ও অন্যতম সম্পাদক। পেশাগত কাজের বাইরে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মানবকল্যাণ মূলক কাজের সঙ্গে গভীর ভাবে সম্পৃক্ত। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মিডিয়া সেলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান ইতিহাস নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণাকারী সংগঠন বাংলাদেশ আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি-বারমস, বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ এবং ইতিহাস একাডেমি, ঢাকা-র আজীবন সদস্য।