রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে কারা?
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:১৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

প্রবাসে বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে দেশ বিরোধিতাকারী চক্র। যার সর্বশেষ উদাহরণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশের আইজি বেনজির আহমেদসহ বাংলাদেশের ছয় কর্মকর্তার নামে মার্কিন প্রশাসনের নানা বিধিনিষেধ। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে কারা?

যদিও এই নিষেধাজ্ঞায় অবাক হয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার নিজেও। পরে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিষয়ে ব‌্যাখ‌্যা নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন চলে যাওয়ার পেছনেও এই চক্র কাজ করেছে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। এ অবস্থার প্রতিকারে ব্যাপকভাবে পাল্টা লবিং চালানোর তাগিদ তাদের।

বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পেছনে হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যোগসাজশই দায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ড. মুহাম্মদ ইউনূস থাকতে না পারায় এর প্রতিশোধ হিসেবে বিশ্বব্যাংকসহ পশ্চিমা বিশ্বের কিছু নেতা পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেও ওই সময় খবর প্রকাশিত হয়। ডেমোক্র্যাটিক দলের বারাক ওবামা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যায়। হিলারি তখন ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। পরবর্তীতে মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন হিলারি। তবে ট্রাম্পের কাছে হেরে যান তিনি।

এদিকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের একাদশ সাধারণ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনে তদবির চালাতে বিএনপি ওয়াশিংটনে একটি ‘লবিং ফার্ম’ ভাড়া করেছিল বলে তখন খবর দিয়েছিল রাজনীতি বিষয়ক ম্যাগাজিন পলিটিকো।

যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বরাত দিয়ে ওই ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘আব্দুল সাত্তার নামে বিএনপির একজন’ গত ২০১৮ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস’ এবং ‘রাস্কি পার্টনার্স’ এর সঙ্গে চুক্তি করেন, যাতে তারা বাংলাদেশের নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে তদবির করে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, এ ধরনের ফার্মের আয়-ব্যয়ের বিবরণী জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই বিবরণীর ভিত্তিতেই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা জানিয়েছিল পলিটিকো।    
পলিটিকো লিখেছিল, ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস বিএনপির পক্ষে বিভিন্ন বার্তা তৈরি করে তা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেবে।

এদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারাহ আহমদ। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খানের ভাগ্নি বলে জানা গেছে। আর ফারাহ আহমেদের নানা ড. আব্দুল বাতেন খান বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।

বাইডেন প্রশাসনের উচ্চপদে কর্মরত বাংলাদেশিদের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের অনেক সখ্যতা রয়েছে বলে জানান লস অ্যাঞ্জেলেস প্রেসক্লাবের সভাপতি মশফুরুল হুদা। তার মতে, ওইসব কর্মকর্তাদের দ্বারা বাংলাদেশের প্রশাসনের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্কে চিড় ধরানোর চেষ্টা চলছে নানা ভাবে। যার ফলে বাইডেন প্রশাসন এমন বিধি নিষেধ দিয়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে দেশপ্রীতি আছে- এমন লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ এই প্রবাসী সাংবাদিক নেতার।
 
এদিকে অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি তাদের রাজনীতির অংশ। 

২০০২ সালের গুজরাটের দাঙ্গার জন্য নরেন্দ্র মোদিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই মোদিকেই মার্কিন মুল্লুকে আমন্ত্রণ জানাতে একদিনও দেরি করেনি ওয়াশিংটন প্রশাসন- এটাই ওয়াশিংটন প্রশাসনের চরিত্র বলেও মত তাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ দখল করে হত্যা, লুটপাট, নির্যাতনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই প্রতিনিয়ত যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তা নজিরবিহীন। সেদিকে না তাকিয়ে অন্য দেশকে সবসময় নজরদারিতে রাখে এই ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটি।’

অনেক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ক্যালিফোর্নিয়ার বাংলাদেশি আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট কাজী মোশারফ হোসেন বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল নানা ধরনের মিথ্যা তথ্য উপাত্ত দিয়ে বাইডেন প্রশাসনের কান ভারি করছে। লবিস্ট নিয়োগ করছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

যদিও, ১৯৮৭ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় ফিলিস্তিনদের ইন্তিফাদা আন্দোলনকারীদের পাখির মতো গুলি করে মারার ঘটনা এখনও চলমান। তবে এর জন্য কোনো ইসরাইলি কর্মকর্তার ওপর কখনও কোনো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়নি। কারণ কথিত এই নিষেধাজ্ঞাকে মার্কিন প্রশাসন বরাবরই ব্যবহার করেছে তাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]