প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৫৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর উপজেলার গঙ্গাধর নদে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে মিঠাপানির সুস্বাদু বিপন্ন প্রজাতির মহাশোল মাছ। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি ঘড়েয়া মাছ নামে পরিচিত।
চড়া দামের এ মাছটি ধরার জন্য সারদিন নদে থাকেন জেলেরা। এ মাছটি ধরার জন্য কেউ নৌকায় আবার কেউ জাল পেতে অপেক্ষা করেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার মাছের সংখ্যা কম বলে জানান তারা।
জেলেরা জানান, প্রতি বছর কার্তিকের শেষ থেকে অগ্রহায়ণ মাসের পুরোটা সময় গঙ্গাধর নদীর কচাকাটা ইউনিয়নের শৌলমারী এলাকায় এসব মাছটি ধরা পড়ে। এ মাছটি গঙ্গাধর নদে অবস্থান করে এক-দুই মাস। গঙ্গাধরের শৌলমারী এলাকার গভীরতা কম বলে এখানেই এ মাছটি জালে ধরা পড়ে। সুতোয় বোনা এক প্রকার টানা জাল ফেলে এ মাছ ধরেন এখানকার জেলেরা।
জেলে নির্মল শীল বলেন, কেকড়া নামের এ জালটি নদীতে ফেলে মাছ ধরতে ছয়জনের একটি দল কাজ করে। দিনে তিন-চারটি করে ঘড়েয়া মাছ ধরতে পারেন তারা। এসব মাছের প্রতিটি ওজন তিন-ছয় কেজি হয়ে থাকে। কেজি প্রতি দাম পেয়ে থাকেন ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা। আকারভেদে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হয় প্রতিটি মাছ। তাই সারাদিনে ৬ জন মিলে ২ থেকে ৩টি মাছ ধরলেও ভালো লাভ হয় তাদের। তাই অন্য মাছের চেয়ে এ মাছ ধরে থাকেন পুরো সময়টা। ব্যাপক সুস্বাদু এ মাছটির স্বাদ নিতে সচ্ছল ব্যক্তিরা বছরের এ সময়টির জন্য অপেক্ষা করেন। অনেকে জেলেদের আগাম চাহিদা দিয়ে থাকেন।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ী খরস্রোতা স্বচ্ছ পানির নদীতে ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ১৫ মিটার গভীরতায় এ মাছটি বিচরণ করে থাকে। কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ মাসের পুরো সময়টা খরস্রোতা নদী গঙ্গাধরে অবস্থান করে এ মাছটি। দুই প্রজাতির এ মাছের একটির গায়ের রঙ কালচে আরেকটি হলদেটে। এ মাছটির প্রধান খাদ্য পাথরের ফাঁকে জন্মানো পেরিফাইটান শৈবাল। একসময় নেত্রকোনার কংস নদ ও সোমেশ্বরী নদীতে এই দুই প্রজাতির মহাশোল মাছ পাওয়া গেলেও নদীর উৎসমুখ বন্ধ হওয়ায় এখন তা বিলুপ্ত।
ভোরের পাতা/কে