প্রকাশ: শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী শুভ দাস। এর আগে, মৃত্যুর আগে লিখে রেখে গেছেন ১০ পাতার সুইসাইড নোট।
শুভ দাস পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের কালিসাগরপাড় মহল্লার সুব্রত দাসের ছেলে। তার মৃত্যু নাড়া দিয়েছে অনেককে। সবার মনে প্রশ্ন, কী এমন ঘটেছিল? কী আছে শুভ দাসের সুইসাইড নোটে?
কেনই বা শুভ বেছে নিলেন আত্মহননের পথ। কী এমন হয়েছিল তার প্রেমিকার সঙ্গে। যার ওপর শুভর এত অভিমান। সব প্রশ্নের উত্তর এসেছে সুইসাইড নোটের সেই ১০টি পাতায়। যা শুভ দাসের নিজ হাতে লেখা।
সুইসাইড নোটে শুভ তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে বিস্তর প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন। সেখানে মেয়েটি তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে বারবার ঠকিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। লেখা থেকে স্পষ্ট হয়েছে প্রেমিকার ওপর অভিমান করেই ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন শুভ।
সুইসাইড নোটের প্রথম পাতার শুরুতে প্রেমিকার নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে- ‘তুমি আমার সঙ্গে এ রকম করলা কেন? আমি তো তোমাকে ঠকাই নাই। তুমি যা বলতা, আমি তাই শুনতাম, কোনো মেয়ের সঙ্গে কথাও বলতাম না। তুমি মানা করতা, সিগারেট খেতাম না। কোনো নেশা করতাম না। তাহলে সবাইকে তুমি মিথ্যা কেন বলছো যে, আমি ভালো না, নেশাখোর। তুমি যা চাইতা তাই দিতাম। ৪-৫ বছর আমাকে ব্যবহার করে গেলা।’
সুইসাইড নোটের বিভিন্ন জায়গায় তার প্রেমিকা অন্য কয়েকটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করত উল্লেখ করে তার সঙ্গে রাগ-অভিমানের কথা জানানো হয়েছে। গেমস খেলার জন্য প্রেমিকাকে ৩০ হাজার টাকার মোবাইল কিনে দিয়েছেন শুভ। চিঠিতে শুভ দাসের আক্ষেপ ঝরেছে। প্রেমের নামে শুভকে বারবার ঠকিয়েছে তার প্রেমিকা। অনেক রাত তারা একসঙ্গে কাটিয়েছে। প্রেমিকার মা সব জানত। তাকে বাড়ির সব কাজে ব্যবহার করত।
সুইসাইড নোটের আরেকটি পাতায় লেখা রয়েছে- ‘তোমাকে আমি মরার কথা বললে তুমি বলতে মরো, মরলে নাকি তোমার ভালো। তাই মরে তোমার ভালো করে দিয়ে গেলাম। আর সব সত্যি কথা বলে গেলাম। মিথ্যা কথা একটাও বলি নাই।’
শেষের পাতায় শুভ লিখেছেন, ‘তোমাকে সত্যি পাগলের মতো ভালবাসতাম। তুমি দাম দিলা না। শুধু ব্যবহারই করে গেলা মা-মেয়ে মিলে। তুমি ও তোমার মা দায়ী আমার মৃত্যুর জন্য।’
চাটমোহর থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শুভ দাসের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ১০ পাতার সুইসাইড নোটটি জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।