কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, যে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নেয়নি, সেই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও ধর্মান্ধরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও দেশে সক্রিয় রয়েছে। তারা দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত। দেশের সুনামহানি ও উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা নানান পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বহেড়াতৈল গণ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ৫০তম টাঙ্গাইলমুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘বিজয় ৭১ সমাবেশে’ এসব কথা বলেন তিনি।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম ও টাঙ্গাইল আঞ্চলিক উন্নয়ন কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
টাঙ্গাইলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, বর্তমানে টাঙ্গাইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পাড়ের এ ভূখণ্ডটি সত্যিকার অর্থে কোনোদিনই স্বাধীন ছিল না। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের ৭ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ দেশের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নারী-পুরুষ তথা সর্বস্তরের মানুষ জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ও বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিল। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন এ স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে আমাদের সবাইকে ধর্মান্ধ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।
সাবেক সচিব ড. খোন্দকার শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. বীরমুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয়, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, সখীপুর পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ, ডেসকোর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আতাউল মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আমিন শরীফ সুপন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারীসহ প্রমুখ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
একই দিন সন্ধ্যায় কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ১০ ডিসেম্বর রাতেই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি টাঙ্গাইল সদর থানা দখল করে সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। তার হাতেই পাকিস্থানি বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করে। জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো জেলা। মানুষ পায় মুক্তির স্বাদ।