বাংলাদেশ বিজয়ের নেতৃত্বদানকারী ও অনুপ্রেরণা ছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
প্রকাশ: শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সারাটি জীবন এই বিজয় মাসটি দেখার জন্য কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের এই বিজয়ের নেতৃত্বদানকারী ও অনুপ্রেরণা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ডিসেম্বর বাঙালির জীবনে এক অনন্য গৌরবের মাস। এই মাসেই বাঙালি জাতি পায় তার লালিত স্বপ্নের স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৯তম পর্বে শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান, ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ, নূরে মদিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা শফিকুর রহমান বিপ্লবী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সারাটি জীবন এই বিজয় মাসটি দেখার জন্য কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের এই বিজয়ের নেতৃত্বদানকারী ও অনুপ্রেরণা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ডিসেম্বর বাঙালির জীবনে এক অনন্য গৌরবের মাস। এই মাসেই বাঙালি জাতি পায় তার লালিত স্বপ্নের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক এক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের সকল শ্রেণির মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় শপথ নেয়।২৫ মার্চের অপারেশন সার্চলাইটে পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম-নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দামাল ছেলেরা রুখে দাঁড়াবার শপথ নেয়। শপথ নেয় স্বজন হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার। এরপর দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর আত্মদানের মাধ্যমে আসে কাক্সিক্ষত বিজয়। বাংলা ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় ১৬ ডিসেম্বর। তবে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রতিটি দিনই ছিল ঘটনাবহুল। যুদ্ধের এই ৯ মাসে জাতি হারিয়েছে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। বিজয় দিবস আমাদের আত্মমর্যাদা, বীরত্ব ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পেরিয়ে গেছে অনেক বছর। কিন্তু বিজয় দিবসের গুরুত্ব কমেনি এতটুকু। এই দিনটির মাধ্যমেই আমরা নতুন প্রজন্মকে এবং বিশ্বকে বার বার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা, এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর কথা ও লাখো শহীদের কথা। মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশ নামে একটি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা, যা প্রত্যেক বাঙালি তার হৃদয়ে ধারণ করে আছে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে, বিজয়ের সেই গৌরবকে বুকে ধারণ করে ৫০ বছরে একটু একটু করে বদলে গেছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন পৌঁছে গেছে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় জীবনমান ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। ক্ষুধা, দারিদ্র ও দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তরুণ প্রজন্ম নতুন উদ্দীপনায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশকে। তাদের হৃদয়ে রয়েছে দেশপ্রেম, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।