প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজকে আমরা বিজয় মাস উদযাপন করছি। এই বিজয় মাসের যে চূড়ান্ত দিন সেই বিজয় কিন্তু একদিনে আসেনি। এই বিজয়ের জন্য অনেক বছর আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে, অনেক নেতা আমাদের এই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিন্তু তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি অর্থাৎ যার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে আমরা বিজয় অর্জন করতে পেরেছি সেই মহানায়ক হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিজয়ের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সেটা আসলে কি? বঙ্গবন্ধু যখন কোলকাতায় ছিলেন তখন থেকেই কিন্তু তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য কি কি প্রয়োজন সেটার জন্য তিনি অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৮তম পর্বে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইতালি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ লিংকন মোল্লা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মেহেদী হাসান রনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
এম এ লিংকন মোল্লা বলেন, আসলে ডিসেম্বর মাসটা আসলে সবথেকে বেশি খারাপ লাগে এই প্রবাসে বসে এই মাসটা মনমতো উপভোগ করতে পারিনা। যদি দেশের থাকতে পারতাম তাহলে প্রানের যে উচ্ছ্বাস নিয়ে বাঙালিদের সাথে একাত্মতা করার যে সুযোগটাকে অনেক মিস করি। এই ডিসেম্বরে আমাদের কিছু কষ্টের স্মৃতি রয়েছে। এই ডিসেম্বর মাসের যে চূড়ান্ত বিজয় তার জন্য এই বাংলা মায়ের ৩০ লাখ শ্রেষ্ঠ সন্তান যারা এই দেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ দিয়েছেন। আমাদের এই বিজয়ের ইতিহাস পৃথিবীর আর কোন ইতিহাসের সঙ্গে মিল নেই। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্যখচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে। একটি সুসজ্জিত বাহিনী অর্থাৎ একটি বিরাট বড় গ্রুপ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে এই বাঙালি জাতিকে তার স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এই রকম ইতিহাস পৃথিবীতে খুব কমই আছে। এই যে বিজয়ের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সেটা আসলে কি? বঙ্গবন্ধু যখন কোলকাতায় ছিলেন তখন থেকেই কিন্তু তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য কি কি প্রয়োজন সেটার জন্য তিনি অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। বাংলাদেশের চূড়ান্ত দুর্দিনে পাকসেনাদের হাত থেকে দেশকে সম্পূর্ণ মুক্ত করার জন্য মুক্তিবাহিনীর বীর সৈনিকগণ আত্মত্যাগ, সাহসিকতা, বিক্রম, ধৈর্য এবং দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তার নিদর্শন একান্ত বিরল। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে বিজয়ের সেই দিনগুলো ছিল গৌরবের, শিহরণের, পরম আরাধ্যের। পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে অর্জিত সে বিজয় ছিল আনন্দের প্রিয়জন হারানো শোকেরও বটে। সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে এবং বিজয়ের সেই আনন্দকে বুকে ধারণ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ৫০ বছরে একটু একটু করে বদলে গেছে আমাদের স্বপ্ন স্বদেশভূমি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন আমরা পৌঁছে গেছি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তরুণ প্রজন্ম নতুন উদ্দীপনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশপ্রেম, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে।