রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ধ্বংসস্তূপ থেকে বিজয়ের সূর্য উঠেছিল এ মাসে
#বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে: কে এম লোকমান হোসেন। #সকল বাঙালিকে বিজয় মাস নিয়ে গর্ব করা উচিত: এম এ লিংকন মোল্লা। #নতুন প্রজন্মের মাঝে বিজয়ের গৌরবগাঁথা তুলে ধরতে হবে: মেহেদী হাসান রনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আজকে আমরা বিজয় মাস উদযাপন করছি। এই বিজয় মাসের যে চূড়ান্ত দিন সেই বিজয় কিন্তু একদিনে আসেনি। এই বিজয়ের জন্য অনেক বছর আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে, অনেক নেতা আমাদের এই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিন্তু তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি অর্থাৎ যার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে আমরা বিজয় অর্জন করতে পেরেছি সেই মহানায়ক হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিজয়ের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সেটা আসলে কি? বঙ্গবন্ধু যখন কোলকাতায় ছিলেন তখন থেকেই কিন্তু তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য কি কি প্রয়োজন সেটার জন্য তিনি অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৮তম পর্বে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইতালি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ লিংকন মোল্লা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মেহেদী হাসান রনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।

কে এম লোকমান হোসেন বলেন, আজকে আমরা বিজয় মাস উদযাপন করছি। এই বিজয় মাসের যে চূড়ান্ত দিন সেই বিজয় কিন্তু একদিনে আসেনি। এই বজয়ের জন্য অনেক বছর আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে, অনেক নেতা আমাদের এই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিন্তু তাদের মধ্যে সবথেকে বেশি অর্থাৎ যার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে আমরা বিজয় অর্জন করতে পেরেছি সেই মহানায়ক হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি তার সারাটি জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের বিজয় ও দেশের জনগণের জন্য জেলে অতিবাহিত করেছেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাঙালি জাতি হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে আসে। এ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের উপনিবেশিক শাসন, শোসন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এ আন্দোলন-সংগ্রাম ১৯৭১-এর মার্চে এসে স্ফুলিংয়ে রূপ নেয়। ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে জাতিকে দিকদির্দেশনা দেন। বাঙালির এ স্বাধীনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিতে থাকে পাকিস্তানি জান্তারা। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বর্বরচিতভাবে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুরু হয় বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালি নিধন অভিযান। তবে পাকিস্তানের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার সর্বস্তরের মানুষ। হাতে তুলে নেয় অস্ত্র, শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চলে বাঙালির মরণপণ যুদ্ধ। বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালি বিজয়ের দিকে ধাবিত হতে থাকে। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বার প্রান্তে এসে পৌঁছায়। এক পর্যায়ে বাঙালির বীরত্বের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত সামরিক বাহিনী। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ  করতে বাধ্য হয়। রক্তক্ষয়ী এ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

এম এ লিংকন মোল্লা বলেন, আসলে ডিসেম্বর মাসটা আসলে সবথেকে বেশি খারাপ লাগে এই প্রবাসে বসে এই মাসটা মনমতো উপভোগ করতে পারিনা। যদি দেশের থাকতে পারতাম তাহলে প্রানের যে উচ্ছ্বাস নিয়ে বাঙালিদের সাথে একাত্মতা করার যে সুযোগটাকে অনেক মিস করি। এই ডিসেম্বরে আমাদের কিছু কষ্টের স্মৃতি রয়েছে। এই ডিসেম্বর মাসের যে চূড়ান্ত বিজয় তার জন্য এই বাংলা মায়ের ৩০ লাখ শ্রেষ্ঠ সন্তান যারা এই দেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ দিয়েছেন। আমাদের এই বিজয়ের ইতিহাস পৃথিবীর আর কোন ইতিহাসের সঙ্গে মিল নেই। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্যখচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে। একটি সুসজ্জিত বাহিনী অর্থাৎ একটি বিরাট বড় গ্রুপ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে এই বাঙালি জাতিকে তার স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে। এই রকম ইতিহাস পৃথিবীতে খুব কমই আছে। এই যে বিজয়ের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সেটা আসলে কি? বঙ্গবন্ধু যখন কোলকাতায় ছিলেন তখন থেকেই কিন্তু তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য কি কি প্রয়োজন সেটার জন্য তিনি অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। বাংলাদেশের চূড়ান্ত দুর্দিনে পাকসেনাদের হাত থেকে দেশকে সম্পূর্ণ মুক্ত করার জন্য মুক্তিবাহিনীর বীর সৈনিকগণ আত্মত্যাগ, সাহসিকতা, বিক্রম, ধৈর্য এবং দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তার নিদর্শন একান্ত বিরল। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে বিজয়ের সেই দিনগুলো ছিল গৌরবের, শিহরণের, পরম আরাধ্যের। পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে অর্জিত সে বিজয় ছিল আনন্দের প্রিয়জন হারানো শোকেরও বটে। সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে এবং বিজয়ের সেই আনন্দকে বুকে ধারণ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ৫০ বছরে একটু একটু করে বদলে গেছে আমাদের স্বপ্ন স্বদেশভূমি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন আমরা পৌঁছে গেছি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তরুণ প্রজন্ম নতুন উদ্দীপনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশপ্রেম, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে।

মেহেদী হাসান রনি বলেন, এই বিজয়ের মাসে যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের নেতৃত্বে দেই, যখন স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি এই দেশের নেতৃত্বে দেই তখন আমরা প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারি। ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বাক্ষর বিজয়ের মাস বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হবে। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন-সাধ পূরণ হয় এ মাসে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনগুলো প্রতিবছর দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। এবারও তারা দিনটি পালনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক রাজনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে। এই বিজয়ের মাস এমনও গিয়েছে যখন বিএনপি-জামায়াত দেশের ক্ষমতায় আসীন ছিল তারা সেসময় তেমন কোন প্রোগ্রাম করেনি এবং আমাদেরকেও করতে দেইনি। আমরা দেখেছি ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর জেল জুলুমের অত্যাচার চলে আসে। ২০০১ থেকে সর্বশেষ ২০০৬ সাল পর্যন্ত যে কালো দিন ও কালো রাতের মধ্যে বাঙালি জাতি জীবনযাপন করেছে সেটা ছিল চরম অসহনীয় একটা সময়। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক রাজনৈতিক স্বপ্ন সাধ পূরণ হয় এ মাসে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]