প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ভবেশ চন্দ্র রায় চিরিরবন্দর থেকে ঠাকুরগাঁও আসেন দুই টাকা রোজগারের জন্য। হাট-বাজার, রেলস্টেশন, গঞ্জের পথে পথে বাসির সুরে বিক্রি করেন বাঁশি। কীভাবে বাঁশি বাজাতে হয়, তা আবার ক্রেতাকে শিখিয়ে দেন তিনি। বাঁশি বাজিয়ে ও বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে চলে দুই সন্তান, স্ত্রী নিয়ে ৬৭ বছর বয়সী ভবেশ রায়ের সংসার।
বিদ্যালয়ে কিছুদিন যাতায়াত ছিল। দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। অল্প বয়স থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। হাট-বাজারের ঘুরে বাঁশির সুর তোলা আর মানুষকে আকৃষ্ট করাই যেন তার ব্যবসা। কেউ বাঁশি শুনে খুশি হয়ে এক কাপ চা খেতে বলে। কেউবা টাকা দিয়ে বাঁশি ক্রয় করে। আকার ভেদে প্রতিটি বাঁশি বিক্রি করেন ২০ থেকে ১০০ টাকায়। ২/৩শ' টাকাও হয় না কোনো দিন।
গুরু কমল কান্তি রায়ের হাত ধরে ভবেশ চন্দ্র রায়ের বাঁশি বাজানো শেখা। সেই থেকে সুরও আয়ত্ত করেছেন কয়েক হাজার গানের। পল্লিগীতি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি, বিচ্ছেদ ও পুরোনো বাংলা সিনেমার গানের সুরও তুলতে পারেন তিনি। ইদানীং অসুস্থতাও পেয়ে বসেছে। মেরুদণ্ডে ব্যথা। অর্থের অভাবে চিকিৎসা ও করতে পারে না। একথা বলতেই চোখ জল ছলছল। এমন অনিশ্চিত জীবন নিয়েই তার বেঁচে থাকা। তাই কখনো নীরবে বসে বেদনার সুর তোলেন এই বংশীবাদক।
ভবেশ রায়ের মতই দুই বেলা দু'মুঠো খেয়ে বাঁচার সংগ্রামে লিপ্ত তরিকুল ইসলাম। তরিকুল মৌসুম ভেদে আম-আমরা-পেয়ারার ভর্তা বিক্রি করেন। কাসুন্দি আর সামান্য মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পাঁচ কিংবা দশ টাকায় বিক্রি করেন। একটু একটু করে বিক্রি হলেও মাস শেষে সংসারের ব্যয়ভার মিটিয়ে ফেলেন তরিকুল। এ ব্যবসার পাশাপাশি ভ্যান চালান তিনি। থাকেন রেলপথ ঘেঁষা, রেলওয়ের সরাসরি জমিতে।