প্রকাশ: বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:৫১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মুক্তিযুদ্ধে এবং একাত্তরের যে চেতনা আমাদের মধ্যে ছিল, সে সময় আমরা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাঙলার আপামর জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। মুক্তির দিশারী। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কখনও বিচ্ছিন্ন করে ভাবা যায় না।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৭তম পর্বে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংগীত শিল্পী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ একাত্তরের কেন্দ্রিয় নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইফফাত আরা নার্গিস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
উৎপল দাস বলেন, ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল ১৬ ডিসেম্বর। বিজয়ের সেই মাহেন্দ্র ক্ষণের ৫০ বছর পেরিয়ে আসার পথে আমরা। বছর ঘুরে আবার এলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এবারের মাসটি ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে এসেছে। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে মাসটি মহাআনন্দের, মহা গৌরবের। স্বজন হারানোর বেদনায় এই মাস একই সঙ্গে শোকের, আবার উদযাপনেরও। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক কর্মী, ছাত্র-শ্রমিক, কৃষক-পেশাজীবী নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ। ৯ মাসের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ মানুষের জীবন ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে জাতীয় জীবনে মুক্তি আসে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল ১৬ ডিসেম্বর। আবার এই ডিসেম্বরেই পাকিস্তানিরা তাদের এ দেশীয় দোসর-রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় মেতে ওঠেছিল। এ কারণে বাঙালি বিজয়ের মাসটি উদযাপন করে একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনায়। মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার বেশি দিন পার না হতেই সক্রিয় হয়ে ওঠে এদেশে ঘাপটি মেরে থাকা পরাজিত শত্রুরা। ১৯৭১ সালে সংঘটিত একটি গণবিপ্লবকে ১৯৭৫ সালের একটি প্রতিবিপ্লব দিয়ে শেষ করে দেওয়া হয়। হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রাণপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে। বিজয়ের ৫০তম বর্ষে ডিসেম্বর মাস শুরুর প্রাক্কালে বাঙালির মনে অন্যতম বড় স্বস্তি এই যে, দীর্ঘকাল পার হলেও জাতির পাপমোচন হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরুর পরে চিহ্নিত রাজাকারদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা গেছে।