বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তুমুল সমালোচনার মধ্যে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) ই-মেইলে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য পদত্যাগপত্র পাঠান। তবে অনলাইনে পাঠানো পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গৃহীত হয়নি। এরপর ডা. মুরাদ হাসান চট্রগাম থেকে ঢাকায় এসে পদত্যাগপত্রে নিজ হাতে স্বাক্ষর করে পাঠান। তবে ঢাকায় তিনি কোথায় আছেন এ তথ্য জানা যায়নি। তিনি তার ধানমন্ডি ১৫ নম্বর সড়কের ব্যক্তিগত বাসা এডিসি লেক জেনিথে এখনও ফেরেননি বলে দেশের এক শীর্ষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা।
জানা যায়, ডা. মুরাদের স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রটি তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শামিউল আলম শামি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেন। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জমা দিয়েছেন। ডা. মুরাদ কোথায় এখন আছেন, জানতে চাওয়া হলে শামিউল আলম বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
ডা. মুরাদের বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য রিয়াজুল বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাসা থেকে বের হওয়ার পর একদিন পেরিয়ে গেলেও তিনি আর ফেরেননি। বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে এক বছর ধরে বসবাস করছেন ডা. মুরাদ। একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার অফিস। প্রতিমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করার পর তার বাসার সামনে থেকে সরিয়ে ফেলা হয় জাতীয় পতাকা। তবে পতাকা নামিয়ে ফেলা হলেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা এখনও বহাল আছেন।
এর আগে সোমবার মুরাদ হাসানকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর করা অশ্লীল মন্তব্যকে ঘিরে কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এর মধ্যেই গত সোমবার ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের আরেকটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন, একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এরপর তিনি আর প্রকাশ্যে আসছিলেন না।
তবে গতকাল মঙ্গলবার ফেইসবুকে এক পোস্টে নিজের আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মুরাদ হাসান। তিনি লিখেছেন, আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো আজীবন।