#ড. মুরাদের বিদায় অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #বাংলাদেশের বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বিশ্ব: আফছার খান সাদেক।
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৩০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজকের ভোরের পাতা সংলাপের আলোচ্য বিষয় বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ। কিন্তু মনে হয় বাংলাদেশের বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বিশ্ব। এই বিজয় মাসের প্রতিটা দিন আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঢালাওভাবে উদযাপন করি। ডা. মুরাদ হাসানের ব্যাপারে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা অন্যদের ক্ষেত্রে একটা সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়াবে বলে আমি মনে করি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৬তম পর্বে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আফছার খান সাদেক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমি প্রথমেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে উনি অত্যন্ত তড়িৎ গতিতে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ডা. মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ইতিমধ্যে তিনি তার পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। সত্যি কথা বলতে কি ডা. মুরাদ হাসানকে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য দাওয়াত দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি একেবারেই অনুষ্ঠানের জায়গায় এসে সেখানের জায়গাটি দেখে তার পছন্দ না হওয়ায় তিনি সেদিন সেই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেনি। একটি দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে এমন একটি খামখেয়ালীপনা আচরণ তার থেকে কোন দিনই আশা করিনি। এরপর থেকে উনাকে আমরা আর কোন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করিনি। তার সঙ্গে কোন অনুষ্ঠানে বা সামাজিক অনুস্থানেও তার সাথে আমি সংযুক্ত হইনি। আমি যতটুকু শুনেছি তার অসভ্য ভাষায় গালাগাল করতে অভ্যস্ত ছিলেন। তার যার অধস্তন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের সাথেও তিনি এই রকম আচরণ করতেন। তার ব্যাপারে বলতে গেলে পেছনের আরও কয়েকটি ঘটনার কথা বলা লাগে। যুবলীগের এক সময়কার দাপুটে নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট এখন কারাগারে। যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী হারিয়ে গেছেন। গাজীপুরের একচ্ছত্র সম্রাট হয়ে ওঠা সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এখন নিঃস্ব। রাজশাহীর কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলী এখন কারাগারে। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে মুরাদ হাসান অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এখন ডা. মুরাদ হাসানের ব্যাপারে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা অন্যদের ক্ষেত্রে একটা সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়াবে বলে আমি মনে করি।
আফছার খান সাদেক বলেন, আজকের ভোরের পাতা সংলাপের আলোচ্য বিষয় বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশের বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বিশ্ব। এই বিজয়কে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঢালাওভাবে উদযাপন করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হোক, বিজয় দিবস হোক সবগুলোই আমরা আনন্দের সাথে পালন করি। এই বিজয়ের মাসে আমরা দেখতে পারছি যে আগের তুলনায় আমাদের অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা কারও দয়াই এই দেশটি স্বাধীন করেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই দেশটি স্বাধীন হয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমরা যদি স্বাধীন না হতাম, তিরিশ লাখ প্রাণ আর প্রায় পাঁচ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিজয় অর্জিত না হতো, তাহলে আজও বাংলাদেশ পাকিস্তানের কলোনি হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত হতো। ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হতাম প্রতিটি ক্ষেত্রে। সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই আমরা বঞ্চিত থাকতাম। কোনো ক্ষেত্রেই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না। আমরা থাকতাম লাঞ্চিত-শোষিত-বঞ্চিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলদেশে না, বঙ্গবন্ধু শুধু আওয়ামী লীগের না, বঙ্গবন্ধু বিশ্বনেতা। মানুষ মরে গিয়ে বিনাশ হয়ে যায়। কিন্তু চেতনা যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় অক্ষুণ্ন থাকে এবং ক্রমান্বয়ে সমৃদ্ধ হয়। আমাদের বিজয় মাস আমাদের চেতনার জায়গা। তাই এই মাসেই সেই চেতনাই আমরা লালন করি। যে মানুষ, যে পরিবার আমাদের জন্য তাদের জীবন দিয়ে গিয়েছে তাদের স্মরণ করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তাদের স্মরণ করলে নিজের মধ্যে একটা আত্মতৃপ্তি আসে।