বাঙালির ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে গবেষণাধর্মী বই ‘নেতা মোদের শেখ মুজিব’-এর মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বইটির সম্পাদক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন বইটির সম্পাদনা পর্ষদের সাথে যুক্ত অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রধান গবেষক নাজমুল হোসেন এবং গ্রন্থটির প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্সের আহমেদ মাহমুদুল হক।
‘নেতা মোদের শেখ মুজিব’ পিক্টোরিয়াল বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সময়কালের (১৯৪৯-১৯৭৫) আওয়ামী লীগের সচিত্র ইতিহাস। রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাঙালির কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং অতুলনীয় নেতৃত্বের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
বইটিতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত প্রতিটি সম্মেলন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের নাম, নির্বাচনী ইশতেহারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিল সন্নিবেশিত রয়েছে। ৫১৬ পৃষ্ঠার ‘নেতা মোদের শেখ মুজিব’ বইটির পাণ্ডুলিপি পরিমার্জন এবং সংশোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির সাথে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের সারিতে প্রবেশ করেছে। মুজিব শতবর্ষে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি মাথাপিছু আয়ের দেশ।’
নেতা মোদের শেখ মুজিব গ্রন্থের সম্পাদক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উপহাস করে বলা হয়েছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। সেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের রোল মডেল। সব সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগের কল্যাণে। কারণ আওয়ামী লীগের কান্ডারি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছি স্বনির্ভর বাংলাদেশ। একারণে আমাদের মুক্তির মিছিলের সবসময়ের প্রকম্পিত শ্লোগান ‘নেতা মোদের শেখ মুজিব, নেত্রী মোদের শেখ হাসিনা।’
'নেতা মোদের শেখ মুজিব' গ্রন্থের সম্পাদনা পর্ষদে আরও আছেন মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম, এন আই খান, মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান, ড. মো. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, সৈয়দ বেলাল হোসেন ও মো. শরীফ মাহমুদ অপু। গবেষণায় সম্পৃক্ত ছিলেন রাজিব দাস, সৈয়দ মিজানুর রহমান, সাফিয়া তাসনিম খান প্রমুখ।
বইয়ের বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দূরদর্শী নেতা। তার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম এবং চূড়ান্তভাবে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। শেখ মুজিব মহত্তম বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক এবং বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। পূর্ব বাংলার এই জনপদ যেটি আজ বাংলাদেশ নামে পরিচিত সেখানে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত। জাতির পিতার সাহস, বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণেই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন। তাই বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সমার্থক।
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায়ে প্রসারিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে, শত বাধা মোকাবেলা করে অদম্য মুজিবের সাহসিকতা আর একাগ্রতায় কিছুদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আওয়ামী মুসলিম লীগ। শেখ মুজিব ইতিহাসের পথপরিক্রমা বুঝেই সঠিক পথেই হেঁটেছেন। তাইতো বাঙালি পেয়েছে বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।