আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কে কোথায় কী করছেন, সব খবর দলীয় প্রধানের কাছে রয়েছে। দলের স্বার্থ ও শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জাহাঙ্গীরের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, ডা. মুরাদের বেলায় তাই হবে। তবে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো অনিয়ম, অপকর্মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। যেটা দেশবাসী এরই মধ্যে প্রমাণ পেয়েছে। অপরাধী যেই হোক, অপকর্ম যেই করুক, তিনি যেই হোন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। সেটা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আবারও প্রমাণ করেছেন।
গত মাসে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের ক্ষেত্রে তাই হবে বলে আভাস দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যেভাবে জাহাঙ্গীরের ক্ষেত্রে হয়েছে, ডা. মুরাদের বেলায় তাই হবে। তবে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ছাড়া সুযোগ নেই।’
নৈতিক স্খলনে দণ্ডিত হলে এমপি পদ হারাতে হয়। মুরাদ হাসান দণ্ডিত না হলেও একজন চিত্রনায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ফোনকল ছড়িয়েছে। তাই তার এমপি পদ থাকবে কি না- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘গুরুতর অভিযোগ এলে এ বিষয়ে স্পিকার সিদ্ধান্ত দেবেন।’
মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা বেশ দীর্ঘ। খালেদা জিয়া ও তার নাতনী জাইমা রহমানকে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য, রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে নায়িকাকে হোটেলে তুলে আনার হুমকি, ধর্ষণের হুমকি, অশ্লীল বক্তব্যসহ নানা অভযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কোন কারণে তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে- এ প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যে কোনো অনিয়ম অপকর্মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অবস্থান কঠোর। অপরাধী যেই হোক- আইনের ঊর্ধ্বে নয়। শেখ হাসিনা তা প্রমাণ করেছেন।’
সবার অপকর্মের হিসাব দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে বলে দলের নেতাদের হুঁশিয়ার করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘কে কোথায় কী করছে, সবার খবর শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে। যারা স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করছে, বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছে, সেই মন্ত্রী এমপি যাই হোক, তার নাম চলে এসেছে। সময়মত প্রত্যেককে শাস্তি দেওয়া হবে।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আইনে না থাকলেও শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি মালিকরাও মেনেছেন। হয়ত কার্যকরের কিছু সমস্যা রয়েছে। তা ঠিক করা হবে। নিরাপদ সড়ক সরকারেরও অঙ্গীকার। দুর্ঘটনা সরকারের জন্য দুর্ভাবনা।’ কারো রাজনৈতিক উসকানিতে কান না দিয়ে পড়াশোনায় মন দিয়ে করোনার ক্ষতি পোষাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন সফররত ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। মন্ত্রী বলেছেন, ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পচাত্তরের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অবিশ্বাস্যে ঢাকা ছিল। এতে কারোই লাভ হয়নি। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির আন্তরিকতায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দকে অভ্যর্থনা জানাতে বাংলাদেশের জনগণ অপেক্ষা করছে।