স্বরাষ্ট্র কমিশনার অভিজিৎ সিংহ সোমবার রাতেই দাবি করেছিলেন, নাগাল্যান্ডের ওটিংয়ে গত শনিবারের ঘটনার জন্য দায়ী সেনা কমান্ডোদের ‘ভুল খবর’ ও ‘নিয়ন্ত্রণহীন গুলিচালনা’। আজ টিজিট পুলিশ তাদের এফআইআরেও লিখেছে, 'পুলিশকে কোনো খবর না দিয়েই কমান্ডোরা গ্রামবাসীদের আসার পথে ওঁত পেতে ছিল। গ্রামবাসীদের গাড়ি দেখেই তারা বিনা প্ররোচনায় গুলি করে লোক মেরেছে। গ্রামবাসীদের হত্যা বা জখম করাই ছিল সেনার উদ্দেশ্য।' প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম দফায় কমান্ডোরা ছয়জনকে গুলি করে মারে। এর পর তাদের লাশ আনতে গেলে সাত গ্রামবাসীকে হত্যা করে তারা। জখম করে ২২ জনকে। এর পরে কমান্ডোরা যথেচ্ছ গুলি চালাতে চালাতে আসামের দিকে পালায়। জখমদের আরো একজন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ছয় সপ্তাহের মধ্যে ওটিংয়ের ঘটনার রিপোর্ট দিতে বলেছে কেন্দ্র ও নাগাল্যান্ড সরকারকে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, ওটিংয়ের ঘটনায় গ্রামবাসীদের আক্রমণে মারা গিয়েছেন ২১ প্যারা এসএফের কমান্ডো গৌতম লাল। ২৪ বছরের ওই জওয়ানের বাড়ি উত্তরাখণ্ডের দেবপ্রয়াগে। ওই ঘটনায় ১৫ জন জওয়ান জখম হয়েছেন। তাদের দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে গ্রামবাসীদের দাবি, এতজন জওয়ান মোটেই জখম হননি।
সেনা কমান্ডোদের এই কাজের পরে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি ফের জোরদার হলো। সেনাবাহিনীর হাতে দিয়ে রাখা বিশেষ ক্ষমতার এই আইন প্রত্যাহারের দাবি করেছে এনপিপিও এনডিপিপি। এই দু’টি আঞ্চলিক দলই বিজেপি নেতৃত্বাধীন উত্তর-পূর্বের জোট নেডা তথা এনডিএ-র শরিক। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা এনপিপি জাতীয় সভাপতি কনরাড সাংমা উত্তর-পূর্বে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানান। নাগাল্যান্ড ও মণিপুরের বিভিন্ন স্থানে আজ আফস্পাবিরোধী মিছিল বেরোয়। কংগ্রেসের তরফেও অভিযোগ আনা হয়, আফস্পা বলবৎ থাকার ফলেই বছরের পর বছর সেনা ও আধাসেনা সাধারণ মানুষের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে।
ভোরের পাতা/কে