সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ঠিক যে কারণে মুরাদ হাসানের মন্ত্রিত্ব গেল?
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৪৯ এএম আপডেট: ০৭.১২.২০২১ ১০:৫৯ এএম | অনলাইন সংস্করণ

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার বাসভবনে ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে এ তথ্য জানান। 

কয়েক দিন ধরেই আলোচনার মধ্যে ছিলেন মুরাদ হাসান। কারণ মুরাদ হাসান অনেক ধরনের কথাই বলে আসছিলেন। 

এখন বড় প্রশ্ন, ঠিক কোন কথার জন্য আসলে তাঁর মন্ত্রিত্ব গেল। তাঁর কোন কথাটা আসলে নৈতিক স্খলনের সমতুল্য? এই প্রশ্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অবশ্য একটি সমস্যা আছে। তিনি যত ধরনের কথা বলেছেন, তার বড় অংশই প্রকাশযোগ্য নয়। তিনি প্রকাশ্যে, জেনেশুনে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তার অনেক কিছু এতটাই অশ্লীল যে তা একেবারেই অপ্রকাশযোগ্য। আবার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে যে টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয়েছে, সেসব কথাবার্তা প্রকাশযোগ্য নয়। মুরাদ হাসান সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন, যাঁর প্রকাশ্য বা গোপন কথাবার্তা, কোনোটাই জনসম্মুখে আনার মতো নয়। সুতরাং আলোচনায় কিছুটা রাখঢাক থাকবে।
 
১.
নাহিদ নামের এক উপস্থাপকের সঞ্চালনায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং তাঁর কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে যা বলেছেন, তা কেবল শিষ্টাচারবহির্ভূত বলা ভুল হবে। বলা যায়, তা ছিল বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন। এই মানসিকতা কেবল যে বক্তা মুরাদ হাসান দেখিয়েছেন তা নয়, উপস্থাপক নাহিদও সমান দোষে দুষ্ট। প্রতিপক্ষ দলের শীর্ষ নেতা–নেত্রীকে বিষোদ্‌গার করা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি অংশই হয়ে গেছে। কিন্তু সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছেন মুরাদ হাসান।

কিন্তু বিএনপি নেত্রী ও তাঁর পরিবার নিয়ে কথা বলার জন্য কারও পদ যাওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সুতরাং খালেদা জিয়া ও জাইমা রহমানকে নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্য নৈতিক স্খলনের মধ্যে পড়বে কি না, সে প্রশ্ন করাই যায়।

২.
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে টেলিফোনে যে ভাষায় কথা বলেছেন, যেভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যেভাবে ভয় দেখিয়েছেন, যেসব ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন, তার সবটাকেই নৈতিক স্খলনের মধ্যে আনা যায়। বেশ কিছুদিন আগের এই টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হয়েছে গতকাল রাতে। শুরুতে কণ্ঠ শুনে ব্যক্তিদের পরিচয় অনুমান করতে হয়েছে। পরে অবশ্য অভিনেতা ইমন গণমাধ্যমে স্বীকার করেছেন যে এই কণ্ঠ তাঁর, মাহিয়া মাহি ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের।

সুতরাং সরকার থেকে যে নৈতিক স্খলনের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কি এই টেলিফোন আলাপ? নাকি যে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে তাদের কারণেই এই নির্দেশ?

৩.
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজই এক সভায় বলেছেন, মুরাদ হাসান একসময় ছাত্রদল করতেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। বিএনপি বা জামায়াত থেকে ক্ষমতার লোভে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার অভিযোগ বেশ পুরোনো। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ঠিক হলে এর সর্বশেষ সংযোজন মুরাদ হাসান। তাহলে এ কারণেই কি পদ গেল প্রতিমন্ত্রীর?

৪.
আবার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া এবং শামসুন নাহার হলের ছাত্রলীগ নেত্রীদের সম্পর্কেও কথা বলতে শোনা গেছে। যেমন তিনি বলেছেন, ‘তারা শিষ্টাচারের সংজ্ঞাটা আমাদের শেখাতে চাচ্ছে। তসলিমা নাসরিনের মতো অনেক তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশ আছে, দুঃখ লাগে কোনটা জানেন? এরা আবার জয় বাংলার কথা বলে। এরা ছাত্রলীগ করছে নাকি, এরা আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, এরা নাকি আবার নেত্রী ছিল কোনো কোনো হলে। কিন্তু রাতের বেলা এরা নিজেদের হলে থাকতেন না, ঘুমাতেন হোটেলে হোটেলে। কারণ, ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার মজা, আর রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলে থাকাটা কি এক কথা? আমি এর চেয়ে বেশি বললে মিছিল শুরু হয়ে যেতে পারে। আমি আর বেশি কিছু বলব না।’

এই বক্তব্যে দলের নারীনেত্রীরাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন, প্রতিবাদও করেছেন। নিজের দলের নেত্রীদের সম্পর্কেই যাঁর এই ধারণা ও মনোভাব, তাঁর সঙ্গে এক টেবিলে বসে দল করা অন্যদের জন্য বেশ কঠিন। এ কারণেই কি চাকরি গেল তথ্য প্রতিমন্ত্রীর?

এর বাইরেও রাষ্ট্রীয় ধর্ম থাকা না–থাকা, একাধিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাসহ নানা বিষয়ে ইদানীং অনেক কথা বলেছেন মুরাদ হাসান। এসবও কি কারণ ছিল মন্ত্রিত্ব যাওয়ার?

সুতরাং মুরাদ হাসানের নৈতিক স্খলনের সংজ্ঞাটা জানা যেমন জরুরি, তেমনি ঠিক কী কারণে পদ গেল, তা বোঝাটাও দরকার। নিশ্চয়ই সরকার তা জানাবে। আর এসব বক্তব্যের শাস্তি পদত্যাগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে কি না, সেটাও জানা প্রয়োজন।



ভোরের পাতা/কে 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]