প্রকাশ: সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:২৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বিজয়ের মাস বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায়। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে মহত্তম ও গৌরবময় ঘটনা অর্জন হয় আমাদের এই বিজয় মাসে। নিশ্চয় একটা দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে আমরা একটি ভিন্ন সময় উপভোগ করছি। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্য দিয়ে এবারের উদযাপনের বাহ্যিক রূপটা একটু ম্লান হয়েছে। এবারের আয়োজনকে অনেক সীমিত আকারে করতে হচ্ছে আমাদেরকে। এটি নিশ্চয় আমাদের জাতির জন্য একটি গৌরবের বিষয়।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৫তম পর্বে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, গৌরব ৭১ এর সাধারণ সম্পাদক, জাগরণ টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
এফ এম শাহীন বলেন, নিশ্চয় একটা দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে আমরা একটি ভিন্ন সময় উপভোগ করছি। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্য দিয়ে এবারের উদযাপনের বাহ্যিক রুপটা একটু ম্লান হয়েছে। এবারের আয়োজনকে অনেক সীমিত আকারে করতে হচ্ছে আমাদেরকে। এটি নিশ্চয় আমাদের জাতির জন্য একটি গৌরবের বিষয়। আজকে এমন একটা সময়ে বাংলাদেশ ৫০ বছরকে স্পর্শ করলো যখন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করেছি এবং করছি। সারা পৃথিবী জানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিভাবে একটি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে, ২৩ বছর সংগ্রাম করে একটি জাতিকে কিভাবে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সেদিন যদি মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে যদি যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করতো তাহলে এই ৫০ বছরে এসে কিন্তু আমরা এই স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারতাম না। একটি জাতির গৌরব সেই দেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের দেশে স্বাধীনতা এসেছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের শ্রোতের বিনিময়ে। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফা ভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে অবধারিত করে তোলে। এই সব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। এরই প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতেই তাকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত বাংলাদেশের সরকারের অধীনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। এই বিজয় অর্জনে মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষায় এই বিজয় অর্জিত হয়। কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও গৌরবগাঁথা গণবীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি।