জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দেশে সাংবিধানিকভাবেই একনায়কতন্ত্র চলছে। একটি দলের প্রধান সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেন। দেশের নির্বাহী বিভাগের প্রধান হন তিনি। সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তের বাইরে দলীয় সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারেন না। সরকারপ্রধান যা বলেন, তার বাইরে কিছুই হতে পারে না। আইনসভাও সরকারপ্রধানের অধীনে। অপরদিকে, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে ৯৫ ভাগই সরকারপ্রধানের অধীনে। রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি বিভাগ এক ব্যক্তির অধীনে থাকায়, এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, যাকে সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র বলা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের বলতে হচ্ছে, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর হতে পারে না।’
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন জিএম কাদের।
এ সময় ময়মসসিংহের কৃতি সন্তান বিশ্বব্যাংকের সাবেক কনসালট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন—জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ওমর, এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, মহিলা পার্টির সদস্য সচিব হেনা খান পন্নি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আশরাফুজ্জামান খান এবং জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি মো. ইব্রাহিম খান জুয়েল।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সাংবিধানিকভাবেই রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন, জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘পল্লীবন্ধুর ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকেই স্বৈরাচারের উত্থান আর গণতন্ত্র নিপাত যেতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। ১৯৯০ সালে সংবিধান সমুন্নত রেখে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংবিধানিক নিয়ম-নীতি মেনেই ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।’
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা হচ্ছে—বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে মানুষে মানুষে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন দলের কর্মী না হলে পরীক্ষায় প্রথম হয়েও কেউ চাকরি পায় না। সরকারি দলের সদস্য না হলে কেউ ব্যবসা করতে পারে না। সরকারি দলের হলে এক ধরনের আইন আর বিরোধীদের জন্য আলাদা আইন। ধনী ও গরিবদের মধ্যে বৈষম্য বাড়িয়ে দিয়েছে। ধনীদের জন্য এক আইন আর গরিবদের জন্য অন্য আইন।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, অ্যাডভোকেট লাকী বেগম, মো. হারুন আর রশীদ, ড. গোলাম মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) আব্দুস সালাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, শফিউল্লাহ শফি, ইয়াহইয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠকি সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, এনাম জয়নাল আবেদীন, আনোয়ার হোসেন তোতা, আনিস উর রহমান খোকন, সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, জয়নাল আবেদীন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, আহাদ চৌধুরী শাহীন, গোলাম মোস্তফা, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. জামাল উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদক মো. জাকির হোসেন মৃধা, নুরুল হক নুরু, মামনুর রহিম সুমন, সমরেশ মন্ডল মানিক, এমএ সুবহান, আক্তার দেওয়ান, ইসারুহুল্লাহ আসিফ, ডা. সেলিমা খান, মীর সামছুল আলম লিপটন, কেন্দ্রীয় নেতা এয়ার আহমেদ সেলিম, আবু সাঈদ স্বপন, আব্দুস সাত্তার, তাসলিমা আকবর রুনা, শেখ সারোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আলী, আলাউদ্দিন আহমেদ, আলমগীর হোসেন, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, আব্দুল আজিজ, মো. আরিফুল ইসলাম রুবেল, সরদার নজরুল ইসলাম, জোনাকি মুন্সি, জিয়াউর রহমান বিপুল, হুমায়ুন কবির মুন্সি, নুরুজ্জামান লিটন, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মেহেদী হাসান শিপন, মিথিলা রোয়াজা, ইলোরা ইয়াসমিন সোলায়মান সামী, রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া এবং জাতীয় পার্টিতে সদ্য যোগদানকারী ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ।