১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর এরশাদ সরকার দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, সব ক্ষেত্রে গণবিরোধী ধারা প্রবর্তন করে। রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হন। একপর্যায়ে সারা দেশে এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।
১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা পলিটেকনিকের ছাত্র মনিরুজ্জামান হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সব ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করার প্রত্যয় ঘোষণা করে। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর হরতালের সময় নূর হোসেনকে স্বৈরাচার এরশাদের বাহিনী গুলি করে। যার বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা ছিল।
অন্যদিকে, ওই দিন সেনা ও পুলিশ বাহিনী আমিনুল হুদা টিটোকে মেরে গুম করে। এ ঘটনায় সব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এরশাদকে হটানোর আন্দোলনে নেমে পড়ে। এভাবে ঘটনাক্রমিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
দীর্ঘ প্রায় ৯ বছরের শাসনের অবসান ঘটে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর। স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর থেকে দিবসটিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন নামে পালন করে আসছে। দিনটিকে আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’, বিএনপি ‘গণতন্ত্র দিবস’ এবং এরশাদের জাতীয় পার্টি ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এটিকে ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ হিসেবেও পালন করে।