মৌলবাদের প্রসার রুখতে সাংস্কৃতিক বিপ্লব দরকার। সেজন্য তরুণ জনগোষ্ঠীকে সংস্কৃতিমনা করে গড়ে তুলতে হবে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে এফবিসিসিআই’র লাল সবুজের মহোৎসব বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সাহায্য করবে।
এফবিসিসিআই আয়োজিত ১৬ দিনব্যাপী “বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব” এর ৫ম দিনের অনুষ্ঠানে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে আয়োজনের মহোৎসব আয়োজনের জন্য এফবিসিসিআইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে, তখন অনেক বিশ্বনেতারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলো। কিন্তু বিজয়ের ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নয়, বরং ঝুড়ি উপচে পড়া দেশ। বিশ্বমানচিত্রে আয়তনের দিক দিয়ে ছোট একটি দেশ হলেও, চাল, মাছ, ফল ও অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদনে অন্যতম প্রধান দেশ। ভবিষ্যতে এই সরকার আমরা বাংলাদেশকে উন্নত, মানবিক, সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। সেলক্ষ্যে পোঁছাতে সবাইকে সম্মিলিত কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যবসা করার পাশাপাশি যাদের কল্যাণে দেশ স্বাধীন হয়েছে,তাদের প্রতিও দায়িত্ববোধ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী সকল বাংলদেশীর জন্য একটি বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণ। এই বিশেষ উপলক্ষ্য উদযাপনে এফবিসিসিআই ১৬ দিনব্যাপী মহোৎসবের আয়োজন করেছে। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীদের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজধানীর হাতিরঝিলের অ্যামফিথিয়েটারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে রবিবার ছিলো রবীন্দ্র উৎসব। এই উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদ্যুত ইতো নাওকি বলেন, রবীন্দ্রনাথের প্রিয় দেশগুলোর একটি ছিলো জাপান। আগামী বছর জাপান-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালিত হবে। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে জাপানি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হবে। তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি জাপান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রবীন্দ্রনাথের গান, লেখা, কবিতা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের গণ আন্দোলনে শক্তি যুগিয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে রবীন্দ্রনাথের “আমার সোনার বাংলা” গানকে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে মাত্র ১২ বছরে সুসম্পন্ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে সাংস্কৃতিক বিপ্লব করতে হবে। মুজিব বর্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় যারা জমি বেদখল করে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে শক্তি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ডিএনসিসি।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন। রবীন্দ্র উৎসব উপলক্ষে তিনি কবিগুরুর নানা কবিতার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন, এবং বাঙ্গালীর মনন, বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার উপযোগীতা তুলে ধরেন।
অতিথিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে, নিজের গলায় দর্শকদের রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে শোনার জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাউকি। এরপরে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৬ দিনব্যাপী “বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব” এর ৬ষ্ঠ দিন সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে নৃত্য উৎসব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।