বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বিজয়ের গৌরব ও আনন্দ চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে
#বিজয়ের মাসে বাঙালি জাতি নতুন করে উদ্দীপনা পায়: রবিন মোহাম্মদ আলী। #বিজয়ের চেতনায় আমাদের উদ্ভাসিত হতে হবে: অ্যাড. আবদুল কুদ্দুস বাদল। #বিজয়ের চেতনায় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ: আল মামুন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রোববার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:১৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

অবশ্যই বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে উদ্দীপনা পায়। এই বছর পূর্ণ হলো গৌরবময় বিজয়ের ৫০ বছর। ১৯৭১-এর এই মাসে গোটা জাতি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তির স্বাদ লাভ করে। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্দীপ্ত বাঙালি জাতি দৃঢ় শপথ নিয়েছিলো স্বাধীনতা অর্জনের। দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৪৪তম পর্বে রোববার (৫ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ভিয়েনার সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী, ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আবদুল কুদ্দুস বাদল, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।

রবিন মোহাম্মদ আলী বলেন, অবশ্যই বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে উদ্দীপনা পায়। এই বছর পূর্ণ হলো গৌরবময় বিজয়ের ৫০ বছর। ১৯৭১-এর এই মাসে গোটা জাতি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তির স্বাদ লাভ করে। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্দীপ্ত বাঙালি জাতি দৃঢ় শপথ নিয়েছিলো স্বাধীনতা অর্জনের। দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে এই মাসটি মহাআনন্দের, মহা গৌরবের, অপার্থিব সৌরভের। স্বজন হারানোর বেদনায় এই মাস একইসঙ্গে শোকেরও। স্বাধীনতাকামী বাঙালির হৃদয়ে বৈজয়ন্তী উড়িয়ে এসেছিলো সেই সোনা ঝরা গৌরবের দিনগুলো। ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাঙালি বীর সন্তানদের সংগে যুদ্ধে একের পর এক পরাজিত হতে থাকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর জল, স্থল ও আকাশপথে সাঁড়াশি অভিযানের মুখে ক্রমাগত পরাজিত হতে থাকে তারা। হয়ে পড়ে দিশেহারা। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর। স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন হৃদয়ে লালন করেছে বাঙালি যুগে যুগে। ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তারই হাত ধরে পূরণ হয়েছিলো। সেই আজন্ম লালিত স্বপ্ন আর তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পেয়েছে অর্থনৈতিক মুক্তি। প্রতি বছর এই দিনটি পালনের মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্বকে বার বার মনে করিয়ে দেয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, বীর শহীদদের কথা। আমরা অনুপ্রাণিত হই আমাদের দেশের গৌরবোজ্জল ইতিহাসের কথা স্মরণ করে। অনুপ্রাণিত হই সামনের পথে এগিয়ে যেতে।

অ্যাড. আবদুল কুদ্দুস বাদল বলেন, আজকে সংলাপের শুরুতে আমি প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেই ব্যক্তিকে, যিনি আমাদেরকে একটি পতাকা এনে দিয়েছেন, যার জন্ম না হলে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না, আজকে এখানে বসে কথা বলতে পারতাম না। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের জাতীয় চার নেতার মাগফিরাত কামনা করছি এবং এর সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল ১৬ ডিসেম্বর। বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ। এই কথাটা শুনতে কেমন জানি লাগে। পৃথিবীতে খুব অল্প জাতি আছে যারা নিজের দেশের জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত বিসর্জন করে নিজের দেশের জন্য স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে।  মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশের মানুষ হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। এ বিজয়ের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ লাভ করে। জাতীয় জীবনে বিজয়ের তাৎপর্য অপরিসীম। বিজয় দিবস আমাদের বাঙালিদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের হলেও এর সাথে জড়িয়ে আছে ৭১ এর বীর শহীদের স্মৃতি, স্বজন হারানোর আর্তনাদ। ত্রিশ লাখ জীবনের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। অশ্রু ও রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ স্বাধীনতা আমাদের কাছে অত্যন্ত গৌরবের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে চলছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পতাকা, গাইছে বিজয়ের গৌরবগাঁথা।

আল মামুন বলেন, আমি শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধা জানাই বাংলাদেশের আরেক নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। শ্রদ্ধা জানাই ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে তার পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাতবরণ করেছিলেন তাদের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। সবাইকে বিজয় মাসের শুভেচ্ছা। একেতো মুজিব বর্ষের বিজয় দিবস এটি অন্যদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি আমরা। এইরকম দুটি মাইলস্টোন দিয়ে আমরা এবার ৫০তম বিজয় দিবসের মাস পালন করছি। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাই এবং তিনি দেশে ফিরে আসার পর তখন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে তুলে দাঁড়ানোর জন্য পরিশ্রম করছিলেন। ঠিক তখন ১৯৭৪ সালে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা দেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করা হয়েছিল। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির পিতা তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পাঁয়তারা করা হয়েছিল। নানা সাম্রাজ্যবাদি শক্তিরা তাদের দেশীয় দোসর, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও পরাজিত দেশি-বিদেশি শক্তি এবং ঘাতক চক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করেছিল। বিশ্ব মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণিত, বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ১৫ আগস্ট একটি। মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ নানা চড়াই উতরাই পেড়িয়ে সরকারে এসে আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কয়টি অত্যন্ত প্রশংসাময়ী কাজ সম্পন্ন করেছে তার দুটো হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আর যুদ্ধাপরাধীর বিচারে ট্রাইবুন্যাল গঠন। যুদ্ধাপরাধীর বিচারে প্রতীকী কলঙ্ক মুক্তি ঘটলেও তাদের অনুসারী লাখ লাখ নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে তাদেরই একটা অংশ অত্যন্ত সুচতুরভাবে কৌশলী মেধা নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিকে অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারকে অস্থির করে, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ভূলণ্ঠিত করে ৭১ এর ব্যর্থতার প্রতিশোধ নিতেই ব্যস্ত। কুষ্টিয়ায় জাতির জনকের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে। গত ক’দিন আগে মামুনুল হক আর বাবুনগরী যে দম্ভোক্তি করেছিলেন, আজকের ন্যক্কারজনক ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। এই আঘাত শুধু একটি ভাস্কর্যেরই অবমাননা নয়, এটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সর্বোপরি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির এক সর্বনাশা চ্যালেঞ্জ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]