প্রকাশ: শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) লাঞ্ছনার শিকার হয়ে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ জন ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
শনিবার (০৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৭৬তম (জরুরি) সভায় উত্থাপন করা হলে সিসিটিভির ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যাদি পর্যালোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির আলোকে অসদাচরণ এর আওতায় সিন্ডিকেট নিম্নবর্ণিত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন- সাদমান নাহিয়ান সেজান, সিএসই বিভাগ (রোল-১৩০৭০২৪), তাহামিদুল হক ইশরাক, সিই বিভাগ (রোল-১৫০১০৯০), সাদমান সাকিব, এলই বিভাগ (রোল-১৫১৯০৩৩), আ. স. ম. রাগিব আহসান মুন্না, এলই বিভাগ (রোল-১৫১৯০৪৮), মাহমুদুল হাসান, সিই বিভাগ (রোল-১৬০১০২৯), মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, এমই বিভাগ (রোল-১৬০৫০৩৯), মো. রিয়াজ খান নিলয়, সিএসই বিভাগ (রোল-১৬০৭০৭৫), ফয়সাল আহমেদ রিফাত, এমই বিভাগ (রোল-১৬০৫০৯৩), মো. নাইমুর রহমান অন্তু, এমএসই বিভাগ (রোল-১৬২৭০১০)।
এদিকে শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে শুক্রবার ৫ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। নতুন কমিটিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি এবং গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আলহাজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়। এছাড়া সদস্য করা হয় কুয়েটের অধ্যাপক ড. খন্দকার মাহবুব, খুলনা জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধি ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধিকে। তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারকে শনিবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতিনিধি দিলে শিগগিরই তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে কুয়েটের লালন শাহ হলের প্রভোষ্ট প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে সেলিম হোসেন কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়কজন নেতা-কর্মির মানষিক নিপিড়নের শিকার হয়েছিলেন। হলের ‘ডাইনিং ম্যানেজার’ নির্বাচন নিয়ে ড. সেলিম হোসেনকে বেশ কিছুদিন ধরে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে তার গতিরোধ করা হয়। পরে ওই শিক্ষককে তড়িৎ প্রকৌশল ভবনে তার ব্যক্তিগত কক্ষে এনে আনুমানিক আধাঘণ্টা রুদ্ধদার বৈঠক করে। এরপর ড. সেলিম হোসেন দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ভোরের পাতা/কে