শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
এবারও অনিশ্চয়তায় বই উৎসব
এনসিটিবি ও ছাপাখানার মালিকরা দায়ী করছে পরস্পরকে
রতন বালো
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১, ২:০৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ

বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক সারা দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে যথাযথ সময়ে উঠছে না। ২০২২ সালের ইংরেজি নববর্ষের দিন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আরও এক মাস দুই দিন বাকি আছে। এই দিনে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। মহামারি করোনাভাইরাস ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে নির্ধারিত সময়ে ছাপার কাজ শেষ হচ্ছে না। সরকার ২০১০ সাল থেকে পহেলা জানুয়ারি উৎসব করে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে। বর্তমানে ছাপাখানার মালিকদের অনিয়মের কারণে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পুরো বই ছাপার কাজ শেষ হতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ গড়াতে পারে। এসব কারণে আসন্ন বই উৎসবে এবারও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা। 

তারা জানান, বই ছাপার এই বিলম্বের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ও ছাপাখানার মালিকরা তারা পরস্পরকে দায়ী করছে। তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৩৪ কোটি ৭০ লাখ কপি পাঠ্যবইয়ের মধ্যে ছাপা শেষে উপজেলায় পৌঁছেছে প্রায় দশ কোটি বই। যা মোট বইয়ের প্রায় ২৮ শতাংশ। ৭২ শতাংশ বই ছাপার কাজ এখনও বাকী রয়েছে। এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন গত ২১ নভেম্বর মতিঝিলস্থ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভবনে যান ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্য পুস্তকের ছাপার কাজের খোঁজখবর নিতে। তারা সর্বস্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে জানানো হয়, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার মোট ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে নয় কোটি ৮৬ লাখ ২১ হাজার ৬০৩ কপি বই ছেপে উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করেছেন ছাপাখানা মালিকরা। এ হিসেবে মোট বইয়ের ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশের ছাপা ও সরবরাহ সম্পন্ন হয়েছে। এবার প্রাথমিক স্তরের মোট বই ছাপা হচ্ছে নয় কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৪ কপি। এর মধ্যে গত ২১ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে ছয় কোটি সাত লাখ ২৪ হাজার ৬০৩ কপি বই। যা মোট বইয়ের ৬০ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের জন্য এবার মোট ২৪ কোটি ৭১ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৬ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ হয়েছে তিন কোটি ৭৮ লাখ ৯৭ হাজার কপি বই। যার মোট বইয়ের ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার কাজ পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (টেক্সট) প্রফেসর ফরহাদুল ইসলাম বলেন, পিছিয়ে নেই, বই ছাপা ও বিতরণ কার্যক্রম পুরোদমেই চলছে। অনেক ছাপাখানায় এখন দুই শিফটে কাজ চলছে, আগামী মাসে কিছু প্রতিষ্ঠানে তিন শিফটে কাজ হবে। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক স্তরের প্রায় চার কোটি বই উপজেলায় পৌঁছে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর প্রায় নয় কোটি বই ছাপা ও বাঁধাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এসব কয়েকদিনের মধ্যে বই উপজেলায় পৌঁছে যাবে। 

এনসিটিবি জানিয়েছে, এবার প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার কাজ পেয়েছে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার কার্যাদেশ পেয়েছে ১৫৮টি প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ১৫১টি এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য জেলার সাতটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সিন্ডিকেট বা জোটবদ্ধভাবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এবার প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে দরপত্র জমা দেওয়ায় পুনর্দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি। এতে সরকারের প্রায় ২৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছে। এবিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম।

তিনি জানান, তারা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯০ শতাংশ বই ছেপে উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করতে পারবেন। বাকি বই ছাপার কাজও জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সব শিক্ষার্থী নতুন ক্লাসে ভর্তি হয় না। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই নতুন বই পেয়ে যাবে।’

এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান, কিছু প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ নিয়ে এখনও ছাপার কাজ শুরু না করা ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেরিতে কাজ শুরু করা এবং কালো তালিকাভুক্ত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের পুরো কার্যক্রমই এবার পিছিয়ে যাচ্ছে।

৩১ ডিসেম্বর মধ্যে সব বই ছাপা সম্ভব কীনা জানতে চাইলে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বাজারজাত সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, মোটেই সম্ভব নয়। কারণ চুক্তি অনুযায়ী, কার্যাদেশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বই সরবরাহ করবেন প্রিন্টার্সরা। এ হিসেবে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান ১৫ জানুয়ারি, কোন কোন প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বই সরবরাহের সুযোগ পাবেন। আবার প্রি-প্রাইমারির বইয়ের টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ৮ ডিসেম্বর। এরপর ১৫ ডিসেম্বরে মধ্যে যদি চুক্তি হয় তারপরও ৯০ দিন সময় থাকে। তাহলে কীভাবে ডিসেম্বরের মধ্যে বই ছাপা শেষ হবে?



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]