প্রকাশ: রোববার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১, ২:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বৈঠকে লন্ডন থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে যুক্ত হন বলে গুলশান সূত্রে জানা গেছে।
তবে দলীয় সিদ্ধান্তহীনতা, সংসদে যোগদান, বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয়ায় বৈঠকটিতে হট্টগোল দেখা দিলে পরে তা পণ্ড হয়ে যায় বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রটি জানায়, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার দলের অচলাবস্থার জন্য মির্জা ফখরুলকে সরাসরি দায়ী করলে বৈঠকের শুরুতেই হইচই বেধে যায়। কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার বদলে হামলা-মামলা থেকে বাঁচতে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি অংশ বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন এমন অভিযোগ তুললে বৈঠকে দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়ে যায়। এসময় দলকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করে রাখা, নেতৃত্ব ছাড়তে অনীহা প্রকাশ, বিএনপিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলেও জমির উদ্দিন অভিযোগ করলে পরিস্থিতি আরো বিগড়ে যায়। প্রত্যুত্তরে মির্জা ফখরুল ব্যারিস্টার জমির উদ্দিনকে সুযোগসন্ধানী ও বিভক্তি সৃষ্টিকারী হিসেবে দাবি করেন। দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অন্তর্কোন্দলে এসময় স্কাইপে নীরবতা পালন করেন তারেক রহমান। অনেকটা হতবাক হয়ে দলের দুর্দশা অনুমান করে অভিমান নিয়েই তারেক চুপচাপ থাকেন বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করে। বিএনপির এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থা, বিভক্তি এবং দোষারোপের রাজনীতিতে হতাশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ও জমির উদ্দিনকে চুপ করিয়ে দেন তারেক।
এ সময় তারেক বলেন, আপনারা একে অপরকে দোষারোপ করেই বিগত এক বছরের পুরোটা সময় ব্যয় করলেন। সরকারকে চাপে রাখা বাদ দিয়ে আপনারা পদ বাঁচাতে এবং পদ আঁকড়ে ধরে রাখতে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে চাপে রেখেছেন। ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’- এর মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, বেগম জিয়ার জন্য কেউ বিএনপি করে না। সবাই পদ ও ক্ষমতা প্রয়োগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আগামীতে সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈঠক আয়োজন করতে পারলে তাকে অনলাইনে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে লাইন কেটে দেন তারেক।
বৈঠকে বিশৃঙ্খলা বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সংস্কারপন্থী এক নেতা বলেন, নির্ধারিত কোনো ইস্যুতে আলোচনা হয়নি। এজেন্ডার বাইরে আলোচনা হওয়ায় কিছুটা মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। আসলে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বৈঠকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অবিশ্বাসের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে কেউ কাউকে বিশ্বাস না করতে পারায় এমনটা হয়েছে। দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে অবশ্যই আগে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতে হবে।