স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেছেন, বাংলাদেশে দেখা প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্নভাবে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এবার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ দেখতে লামায় এসে যে বিষয়গুলো দেখলাম তা অপূর্ব এবং অত্যন্ত সৃজনশীল। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শুধু বাংলাদেশে না, পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের যে কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করতে পারি।
বান্দরবানের লামায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র শাফিয়ান, স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ও কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ও শনিবার (২৭ নভেম্বর) তিনি এসব পরিদর্শন করেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সচিব কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। সেখানে তিনি কোয়ান্টামের শিক্ষার্থীদের প্যারেড, ডিসপ্লে, ব্যান্ড ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক মানের জিমনেসিয়ামে কোয়ান্টামের ক্ষুদে জিমন্যাস্টদের অভাবনীয় পারফরম্যান্স তাকে অভিভূত করে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি চৌকষ প্যারেড ও ব্যান্ড বাদক দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের খ্যাতনামা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে জানতে পেরে লোকমান হোসেন মিয়া সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। তার প্রমাণ কোয়ান্টামে এসে দেখলাম।
২০০১ সালে বান্দরবানের লামার দুর্গম পাহাড়ে স্থানীয় ৭ মুরং শিশুকে নিয়ে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের যাত্রা শুরু। বর্তমানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আড়াই হাজারের বেশি শিশু-কিশোর এখানে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠছে। শিশুদের খাবার, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের সবকিছুই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সম্পন্ন হয়।
২০১৬ থেকে ২০১৯ পর পর চার বছরই ক্রীড়ানৈপুণ্যে দেশসেরা নির্বাচিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক যে কোনো আসরে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ সাফল্য দেখিয়ে আসছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশ ও কুচকাওয়াজে ২০১৫ সাল থেকে টানা পাঁচ বছর প্রথম স্থান লাভ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
পরিদর্শনকালে লোকমান হোসেন মিয়ার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শাহরিয়ার কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক, বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অং সুই প্রু মারমা, সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা, লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী, লোকমান হোসেন মিয়ার স্ত্রী খোদেজা বেগম ও কন্যা আইনানী তাজরিয়ান অর্পিতা।