নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে ফিরবেন না: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ১০:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে খালেদা জিয়ার প্রতি বরাবরই সদয় ও মানবিক আচরণ করেছেন। আজকের পরিস্থিতিতে যে ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় ও বিশেষ হস্তক্ষেপে আজ জেলখানার বাহিরে আছেন। তিনি এখন সিনিয়র সিটিজেন এবং তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক, এই সব অবস্থা বিবেচনা করে যত রকমের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয় আছে সবগুলো ঝেড়ে দিয়ে একান্তই মানবিক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৩৩তম পর্বে বুধবার (২৪ নভেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বেলজিয়াম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছি সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন যেটা আমরা সবাই জানি। তখন আমরা লোকমুখে শুনেছি তার অন্যান্য সমস্যার মধ্যে লিভারের সমস্যা থাকলেও থাকতে পারে। এখন বাংলাদেশের যেকোনো লিভারের রোগীকে কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি আছেন তাদের সব বিভাগের রোগীকে যে আমার দেখতে হবে এমন কোন বিষয় নিশ্চয় নেই। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসবে প্রত্যাশা করেছিলাম যে হয়তো আমাকে উনার চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট করা হবে, হয়তো একবার দুবার তার সেবাদান করার সুযোগ পাবো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে উনার কোন রিপোর্ট দেখার সুযোগ আমার এখনো হয়ে উঠেনি কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতে একটি আর্জি করা হয়েছে যে যারা বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী না সেসব চিকিৎসকদের হাতে খালেদার চিকিৎসা নিরাপদ নয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে একটি নির্দেশনা আসে যে শুধু বিএনপি ঘোরোনার চিকিৎসকরায় তার চিকিৎসায় নিয়োজিত হতে পারবেন অন্য কেউ পারবেন না। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে যখন কোন রোগীকে দেখি তখন আমি দেখি যে আমার সামনে যে আছেন তিনি শুধু রোগী, অন্য কিছু নয়। এখন এই যে আবেদন করা হয়েছে তাদের তরফ থেকে এটা কিন্তু আমাদের চিকিৎসক সমাজের মধ্যে একটা দ্বিধা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে যে কিন্তু পঁচাত্তরের সময় কিংবা ৯০ এর আন্দোলনের সময় ছিলো না। এই যে চিকিৎসকদের মধ্যে যে একটা বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে যে তোমরা মানবিক নও, তোমাদের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ আছে; এই বিষয়টা কিন্তু জন্ম দিয়েছিল বিএনপির সরকার। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তার পছন্দের চিকিৎসকদের দ্বারা সেবা নিয়েছিলেন এবং বর্তমানে তিনি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এখন কথা হচ্ছে যে কেন তাকে বিদেশে নেওয়া হচ্ছে না। আমি যতটুকু জেনেছি যে, উনার যে সব রোগ রয়েছে তার মধ্যে উনার লিভারের কিছু সমস্যা আছে। এটা একদময় আমি ধারণা করছি কারণ আমি তার কোন রিপোর্ট দেখেনি, যতটুকু জেনেছি অনলাইন গণমাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে। সেসব রিপোর্ট যদি ঠিক হয়ে থাকে আমার কাছে যেটা মনে হয় পৃথিবীর কোন দেশেই এমন কোন চিকিৎসা অপেক্ষা করছে না যে যাদের স্পর্শে তিনি আবার সুস্থ হয়ে রাজনৈতিক ময়দানে ফিরে আসবে। এটা একটি নির্মম বাস্তবতা এবং এটাকে আমাদের মেনে নিতে হবে।