সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
খালেদা জিয়ার প্রতি শেখ হাসিনার মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত
#খালেদা জিয়ার প্রতি মানবিক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে ফিরবেন না: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। #খালেদা জিয়াকে সরকার যতটুকু সম্ভব সুযোগ দেওয়ার তা সম্পূর্ণ দিয়েছে: অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ১০:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে খালেদা জিয়ার প্রতি বরাবরই সদয় ও মানবিক আচরণ করেছেন। আজকের পরিস্থিতিতে যে ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় ও বিশেষ হস্তক্ষেপে আজ জেলখানার বাহিরে আছেন। তিনি এখন সিনিয়র সিটিজেন এবং তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক, এই সব অবস্থা বিবেচনা করে যত রকমের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয় আছে সবগুলো ঝেড়ে দিয়ে একান্তই মানবিক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৩৩তম পর্বে বুধবার (২৪ নভেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বেলজিয়াম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।

ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আজকে আমরা যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি সেটা খুবই মানবিক ও সংবেদনশীল একটি বিষয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে খালেদা জিয়ার প্রতি বরাবরই সদয় ও মানবিক আচরণ করেছেন। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যে সকল রাজনৈতিকবিদ জড়িত ছিলেন বা তার সমসাময়িক রাজনৈতিক অঙ্গনে যারা জড়িত ছিলেন সবার সাথেই কিন্তু শেখ হাসিনা মানবিক আচরণ করেছেন। তারা তাদের স্বীয় কর্মের কারণে জেলখানায় কারাতিপাত করেছেন কিন্তু সেখানেও জননেত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত তাদের খোঁজ নিয়েছেন এবং তাদের উন্নত খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমানের পুত্র আরাফাত রহমান কোকো যখন মৃত্যুবরণ করেছিলেন তখন কিন্তু শেখ হাসিনা সেই পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সশরীরে তার বাসায় যান সেই শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানানোর জন্য। কিন্তু অতিব পরিতাপের বিষয় এই রকম একটা শোকের সময় সেই পরিবার যে ন্যূনতম ভদ্রতা, সখ্যতা, মানবিকতা যেটা দেখানোর কথা ছিল তারা সেটা করেননি। এই বিষয়টাকে নিয়েও তারা রাজনীতি করার চেষ্টা করেছেন এবং যে সংকীর্ণমনতার পরিচয় তারা দিয়েছেন সেটা কিন্তু আমরা এখনো ভুলে যায়নি। আজকের পরিস্থিতিতে যে ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় ও বিশেষ হস্তক্ষেপে আজ জেল খানার বাহিরে আছেন। তিনি এখন সিনিয়র সিটিজেন এবং তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক, এই সব অবস্থা বিবেচনা করে যতরকমের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয় আছে সবগুলো ঝেড়ে দিয়ে একান্তই মানবিক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছি সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন যেটা আমরা সবাই জানি। তখন আমরা লোকমুখে শুনেছি তার অন্যান্য সমস্যার মধ্যে লিভারের সমস্যা থাকলেও থাকতে পারে। এখন বাংলাদেশের যেকোনো লিভারের রোগীকে কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি আছেন তাদের সব বিভাগের রোগীকে যে আমার দেখতে হবে এমন কোন বিষয় নিশ্চয় নেই। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসবে প্রত্যাশা করেছিলাম যে হয়তো আমাকে উনার চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট করা হবে, হয়তো একবার দুবার তার সেবাদান করার সুযোগ পাবো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে উনার কোন রিপোর্ট দেখার সুযোগ আমার এখনো হয়ে উঠেনি কারণ বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতে একটি আর্জি করা হয়েছে যে যারা বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী না সেসব চিকিৎসকদের হাতে খালেদার চিকিৎসা নিরাপদ নয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে একটি নির্দেশনা আসে যে শুধু বিএনপি ঘোরোনার চিকিৎসকরায় তার চিকিৎসায় নিয়োজিত হতে পারবেন অন্য কেউ পারবেন না। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে যখন কোন রোগীকে দেখি তখন আমি দেখি যে আমার সামনে যে আছেন তিনি শুধু রোগী, অন্য কিছু নয়। এখন এই যে আবেদন করা হয়েছে তাদের তরফ থেকে এটা কিন্তু আমাদের চিকিৎসক সমাজের মধ্যে একটা দ্বিধা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে যে কিন্তু পঁচাত্তরের সময় কিংবা ৯০ এর আন্দোলনের সময় ছিলো না। এই যে চিকিৎসকদের মধ্যে যে একটা বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে যে তোমরা মানবিক নও, তোমাদের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ আছে; এই বিষয়টা কিন্তু জন্ম দিয়েছিল বিএনপির সরকার। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তার পছন্দের চিকিৎসকদের দ্বারা সেবা নিয়েছিলেন এবং বর্তমানে তিনি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এখন কথা হচ্ছে যে কেন তাকে বিদেশে নেওয়া হচ্ছে না। আমি যতটুকু জেনেছি যে, উনার যে সব রোগ রয়েছে তার মধ্যে উনার লিভারের কিছু সমস্যা আছে। এটা একদময় আমি ধারণা করছি কারণ আমি তার কোন রিপোর্ট দেখেনি, যতটুকু জেনেছি অনলাইন গণমাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে। সেসব রিপোর্ট যদি ঠিক হয়ে থাকে আমার কাছে যেটা মনে হয় পৃথিবীর কোন দেশেই এমন কোন চিকিৎসা অপেক্ষা করছে না যে যাদের স্পর্শে তিনি আবার সুস্থ হয়ে রাজনৈতিক ময়দানে ফিরে আসবে। এটা একটি নির্মম বাস্তবতা এবং এটাকে আমাদের মেনে নিতে হবে।

অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা বলেন, আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উনার যে মানবিক দৃষ্টান্ত আছে সেখান থেকে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি তিনি যে সুবিচার করেছেন সেটা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সবাই দেখছেন। উনাকে জেল খানা থেকে বাহির করে এনে বাইরে রেখে পরে তাকে তার নিজ বাসায় রেখে যে চিকিৎসার ব্যবস্থা শেখ হাসিনা করেছেন সেখানে তিনি তার মানিকতার যথেষ্ট নজির স্থাপন করেছেন। উনি আগেও এটা দেখিয়েছেন এবং এখনো দেখিয়েছেন। খালেদা জিয়া আগেও অসুস্থ হয়েছিলেন। তখনও বিএনপি এই কথা তুলেছিল যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তখনও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসা নিয়েই তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন। তখনকার মতো এখনও তারা একই এজেন্ডায় রাজনৈতিক মাঠ গরম করছেন। আদালতের বিচারে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে তার দল রাজপথের আন্দোলনে নেমেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকদের বাইরে বিএনপি নেতারাও অনেক কথা বলছেন। তার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে বর্তমান সরকার বেশ আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এ বিষয়ে মানবতা দেখিয়েছেন। তিনি তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারামুক্তি দিয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে তার চিকিৎসার দাবি করছে বিএনপি। কিন্তু আইনের বাইরে গিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার দাবিটা তার স্বাস্থ্যগত কারণে নয়। পুরো দাবিটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]