প্রকাশ: বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ৭:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘হেজাব খুলবে না ঝর্ণা, শরীয়তের নিষেধ আছে’। ধর্ষণ মামলার বাদীকে এমন আদেশ দেওয়ার পর সবার চোখ তখন এজলাসে দাঁড়ানো সেই মামলার আসামি হেফাজতের সাবেক নেতা মামুনুল হকের দিকে।
বুধবার দুপুর সোয়া ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
আদালতের পিপি রাকিবুজ্জামান রকিব জানান, সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলায় বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্নার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ বাদীকে জেরা করেছে। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মামুনুল হক বারবার বাদীকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন কথা বলার চেষ্টা করেন। পরে বিচারকের আদেশে তিনি চুপ হয়ে যান।
পিপি রকিব আরো জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতে ঝর্নার মুখের হিজাব খুলতে বলেন বিচারক। ওই সময়ে মামুনুল হক উচ্চস্বরে বলে ওঠেন- ‘শরীয়তের হুকুম হিজাব খুলবে না ঝর্না।’ পরে ঝর্না একবার হিজাব খুলে বিচারককে মুখ দেখিয়ে ফের মুখ ডেকে রাখেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ২টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে ফের কাশিমপুর কারাগারে নেয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মুনুল হকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শহীদুল ইসলামের সঙ্গে জান্নাত আরা ঝর্নার দাম্পত্য জীবন সুখে-শান্তিতেই অতিবাহিত হচ্ছিল। তাদের ১৭ ও ১৩ বছরের দুটি সন্তান আছে। স্বামীর বন্ধু হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুলের সঙ্গে ঝর্নার পরিচয় হয়। তাদের বাসায় যাতায়াতের সুবাদে সংসারের মতানৈক্যে ভূমিকা রাখেন মামুনুল। এসব কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মামুনুলের পরামর্শে ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শহীদুলের সঙ্গে বিচ্ছেদ করেন ঝর্না।
জান্নাত আরা ঝর্নার অভিযোগ, বিচ্ছেদের পর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল তাকে ঢাকায় যেতে প্ররোচিত করেন। সেখানে বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। পরে মামুনুলের পরামর্শে তিনি কলাবাগানের একটি বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন। ঐ সময় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মামুনুল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।