প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১, ২:৪০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
৪৫ দিনের মধ্যে এসোসিয়েশনের নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের কোটি টাকার সেই কমিটি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, খুলনার পরিচালক স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চিঠিতে ৪৫দিনের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথাও বলা হয়েছে। সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ভোমরা স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাতক্ষীরা থানা ও নির্বাচন কমিশনার দাবীদার মো. আসাদুজ্জামানকে এই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ এবং ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে পৃথক পৃথক স্মারকে উক্ত চিঠি পাঠানো হলেও তা গোপন করে রাজু-নাসিমের নেতৃত্বাধীন অবৈধ ঘোষিত কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন, আইনের আশ্রয় গ্রহণকারী সিএন্ডএফ এজেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, খুলনার পরিচালক স্মাক্ষরিত চিঠির সত্যতাও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় একটি অনির্বাচিত কমিটি গঠনের জন্য কতিপয় জনপ্রতিনিধির কাছে গোপনে দেন দরবার শুরু হয়। কমিটির দাম ওঠে কোটি টাকা। এনিয়ে দৈনিক বিভিন্ন পত্রপত্রিকার অগ্রিম খবর প্রকাশিত হলে তোড়পাড় শুরু হয়। এসোসিয়েশনের আরাফাত-নাসিমের নেতৃত্বাধীন কমিটির সভায় কোন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ না জানানো এবং আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৪ অক্টোবর এসোসিয়েশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একে ফজলুল হক এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি উপস্থিত হয়ে একটি কমিটি ঘোষণা করেন।
রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, খুলনার পরিচালক স্বাক্ষরিত ১৪ অক্টোবরের চিঠিতে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনার দাবীদার মো: আসাদুজ্জামান, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশন (রেজি নং-খুলনা-২০৪৬) এর স্বাক্ষরিত পত্রের সাথে সংযুক্ত ট্রেড ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনী ফলাফল গত ১০-১০-২০২১ খ্রি: তারিখে এ দপ্তরে পাওয়া গেছে।
পত্রে আরো বলা হয়েছে, ট্রেড ইউনিয়নের গত ০৪-০৯-২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সাধারণ সভা ঐ দপ্তরের ২ (দুই) জন কর্মকর্তা তত্ত্বাবধান করত: প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। উক্ত প্রতিবেদন হতে জানা যায়, ইউনিয়নের ২০১৯ ও ২০২০ সালের আয় ব্যয়ের উপস্থাপিত হিসাব বিবরণী সভায় অনুমোদিত হয়নি। সভায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ও নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়নি। সভায় পরবর্তি ৩ (তিন) বছরের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের নাম ঘোষণা করার উক্ত প্রক্রিয়া ট্রেড ইউনিয়নের বিদ্যমান রেজিস্ট্রিকৃত গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনের আলোকে প্রতিয়মান হয় যে, ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশন (রেজি: নং-খুলনা-২০৪৬) এর গত ০৪-০৯-২০২১ খ্রি: তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সাধারণ সভার কার্যক্রম ট্রেড ইউনিয়নের বিদ্যমান গঠনতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসরণ পূর্বক হয়নি।
ট্রেড ইউনিয়নের নির্বাচনী সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে এ দপ্তরের ১৪-০৯-২০২১ খ্রি: তারিখের ৪০.০২.০০০০.১০৩.৩৪.০৩ (২য়খ-).১৩-১৪৪৬/১(৪) নং পত্রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত-১৮) এর ৩১৭ (৪) (ঘ) ধারা এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং ৭৩৭২/২০১১ এবং ৪৩১৬/২০১৪এর ০৮/০৭/২০১৪ খ্রি: তারিখের আদেশ মোতাবেক ট্রেড ইউনিয়নের নির্বাচন সংক্রান্ত সাধারণ সভাসহ নির্বাচনী সকল কার্যক্রম পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়নের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন চেপে রাখা এই চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এনিয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহণকারী সিএন্ডএফ এজেন্ট ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। তিনি বলেন, আমি রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, খুলনার পরিচালক এর কার্যালয়ে যেয়ে এই চিঠি দুটি পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে আমি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবো।