নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ।
রবিবার (২১ নভেম্বর) ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এ আহবান জানান তিনি। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান। যাঁরা মাতৃভূমির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময়ে দেশ ও দেশের বাইরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যদের তিনি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন। সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধাহত সদস্য ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের এই দিনে তিনবাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর সর্বাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের সম্মিলিত আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে, যা বাঙালি বিজয় অর্জনকে ত্বরান্বিত করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্বগাথা জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনী জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতিগঠনমূলক কর্মকান্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে পেশাগত দক্ষতা, সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মহামারি মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থেকে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনীতে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম, যা নিঃসন্দেহে সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক, দক্ষ ও গতিশীল করবে। যে-কোনো বাহিনীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, পেশাগত দক্ষতা এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং বাহিনীসমূহের সকল সদস্য ও তাঁদের পরিবারবর্গের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। খবর: বাসস।