দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী নাতির সাথে সুনামগঞ্জ জেলা আ. লীগ সভাপতির বৈঠক
জাতীয় পার্টির নেতা ও হবিগঞ্জ জেলার দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ এটিএম কায়সার যখন কারাগারের কনডেম সেলে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন তখন তারই আপন নাতি সৈয়দ তানজিল আহমেদ ক্রমশ আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরীতে ব্যস্ত। সবচেয়ে বড় কথা হলো এই রাজাকার উত্তরসূরী কেবল নিজের হবিগঞ্জ জেলাতেই নিজের প্রভাব সীমাবদ্ধ রাখছে না, সে এখন সুনামগঞ্জ জেলায়ও নিজের প্রভাব বিস্তারে উড়াচ্ছে লাখলাখ টাকা।
এদিকে গত ১০ নভেম্বর, নিজের ফেইসবুক আইডিতে দেয়া স্ট্যাটাস দেয় সৈয়দ তানজিল আহমেদ। সেখানে দেখা যায় সে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের সাথে একই সোফায় বসে মশকরার হাসি দিয়ে লিখেছে: "সুনামগঞ্জের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান নানার সঙ্গে বৈঠক।
‘‘সুনামগঞ্জের "SDG Localization" দলের সদস্যদের মূল ভূমিকা রাখার পরিকল্পনা করব। অবশ্যই, এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে তাই আমার ভাগ্য কামনা করুন। Consider this an initiative I am taking to honor the 49th anniversary of the Awami Jubo League.
আমরা যতই মেধাবী হই না কেন, যতই শক্তি আমাদের মধ্যে থাকুক না কেন, এই নেতাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া যুব সমাজের দায়িত্ব। Plus, this guy's stories and humor is top notch - eto cute.
May we learn from the past and walk towards the future.
আমি কাল ও পরশু দিরাই ও ভাটিপাড়ায় থাকব। দেখা হবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’’
সৈয়দ তানজিল আহমেদ, যার আপন দাদা যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সার (সায়হাম গ্রুপের মালিক), সে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির পাশে বসে প্রকাশ্যে লিখছে, "সুনামগঞ্জের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান নানার সঙ্গে বৈঠক"। তারমানে কি দাঁড়ালো? সুনামগঞ্জ জেলায় কি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের এতোটাই আকাল পড়ে গেছে যে অন্য আরেক জেলা থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এক কুখ্যাত রাজাকারের আপন নাতিকে এনে তার হাতে "সুনামগঞ্জের ভবিষ্যত" এর ভার তুলে দিতে হবে? অথচ এই কুলাঙ্গার নাতির আপন দাদা সৈয়দ কায়সার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর হবিগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ করেছিলো।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নীতিনির্ধারক মহলের উচিত বিষয়টা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা। সুনামগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের উচিত যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সারের নাতি সৈয়দ তানজিল আহমেদকে ওই জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা।
জানা গেছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অনুগত ভৃত্য সৈয়দ এটিএম কায়সারের নেতৃত্বে হবিগঞ্জ জেলার হিন্দু জনগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ব্যাপক নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। তার নেতৃত্বে ধর্ষিতা হন বহু নারী। এমন এক জঘন্য নরপিশাচের উত্তরসূরী কিভাবে যুবলীগে স্থান পেলো এটা নিয়ে এরই মাঝে প্রশ্ন উঠেছে।
আরো জানা গেছে, সৈয়দ তানজিল আহমেদের নেতৃত্বে দিরাই উপজেলায় গড়ে উঠছে ক্যাডার বাহিনী। তানজিল প্রকাশ্যেই বলে বেড়াচ্ছেন, ২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনিই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন। তাকে নাকি সমর্থন দিচ্ছেন আওয়ামী লীগেরই এক প্রভাবশালী নেতা।