#বিশ্ব মর্যাদার অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন শেখ হাসিনা: সাদেক আলী শিপু। #জননেত্রী থেকে বিশ্বনেত্রীতে ভূষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা: আফছার খান সাদেক। #বিশ্বের বিপন্ন মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা: এফ এম শাহীন।
আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেসব পরিকল্পনা করেছেন এবং যে সব কাজ করেছেন সেখানে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস-কপ-২৬ সম্মেলনে তিনি যেসব কথা বলে বিশ্বনায়কে পরিণত হলেন- বিশ্বের বিপন্ন মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা। তার হাতে নিরাপদ বাংলাদেশ, একটি মানবিক বাংলাদেশ, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং একটি সমৃদ্ধশালি দেশে রূপান্তরিত হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫১৮তম পর্বে মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা সাদেক আলী শিপু, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা আফছার খান সাদেক, গৌরব ৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
সাদেক আলী শিপু বলেন, আপনারা সবাই জানেন যে শেখ হাসিনা আজ শুধু জননেত্রী না তিনি আজ নিজেকে বিশ্ব নেতায় পরিণত করেছেন, এটা আমাদের সকল বাংলাদেশীর গর্ব, এই গর্ব সারা বিশ্বের। আজ ইউকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আমেরিকার প্রধানমন্ত্রী বাইডেনসহ সবার মুখে আজ একটি কথায় উচ্চারিত হচ্ছে যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা আর কোনভাবেই দাবায়ে রাখা যাবে না। দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা আজ বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু দামি দামি খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। নিজের মনোবল, প্রবল আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তায় অবিচল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল কর্মযজ্ঞ নিয়েই উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশকে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছেন। করোনাকালেও জীবন-জীবিকা রক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতি সচলে তাঁর ম্যাজিক বিস্ময়কর। সাহসী প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মোকাবিলাতেও গোটা বিশ্বের কাছে ‘রোল মডেল’। ‘মানবিক প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তায় আবির্ভূত হন গভীর সংকটে আলোর দিশারী শেখ হাসিনা। দেশের প্রয়োজনে আলো ছড়িয়ে হয়ে উঠেছেন আরও অপ্রতিরোধ্য, অপরিহার্য এবং অনিবার্য। দীর্ঘ সংগ্রামমুখর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আর সাহসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নন্দিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বাঙালিদের এনে দিয়েছেন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক যুগে বদলে গেছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, নিজস্ব অর্থায়নে ৪৫০টি মডেল মসজিদ, সোয়া লাখ গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে ঘর প্রদান, মেট্রোরেল নির্মাণের মতো মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি শতভাগ বিদ্যুতায়ন, প্রতিটি মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, শক্ত অর্থনীতি তৈরি করা, শতভাগ শিক্ষার হার অর্জন, দারিদ্র্য নির্মূল, করোনা সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে চালকের আসনে সঠিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। জাতিসংঘসহ বিশ্ব ফোরামে তাঁর অবস্থান থাকে সদা-সুদৃঢ়। ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা, নিপীড়িত জাতি ও দেশসমূহসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ও অবস্থান ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। আমি বিশ্বাস করি অবশ্যই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে ২০৪১ সালকে সামনে রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে কর্মকাণ্ড বর্তমানে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে করে যাচ্ছেন সেটা ২০৪১ সালের আগেই উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ।
আফছার খান সাদেক বলেন, আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেসব পরিকল্পনা করেছে, যে সমস্ত পরিক্রমা করেছেন, যে সমস্ত কাজ করেছেন সেখানে বাংলাদেশে আজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতি এমনকি করোনা দুর্যোগেও গত কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি তার নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে এগিয়ে গেছে দেশ যা চমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) দারিদ্র্য দূরিকরণ ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সার্বজনীন আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ক’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। শুধু বাঙালি নয়; বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মনের গহীন কোণে আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আসন গেড়েছেন, তার আকাশসম বিশাল মানবিকতা, হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা আর মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার মাধ্যমে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা শুধু জাতীয় নেতাই নন, তিনি আজ তৃতীয় বিশ্বের একজন বিচক্ষণ বিশ্বনেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা, উদার, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানমনস্ক জীবনদৃষ্টি তাকে করে তুলেছে এক আধুনিক, অগ্রসর রাষ্ট্রনায়ক। একবিংশ শতাব্দীর অভিযাত্রায় দিন বদল ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাণ্ডারী তিনি। সারা বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের ভরসাস্থল। বিশ্ব মানবতা যখন মুখ থুবড়ে পড়ছে, মানবতার ঝান্ডা হাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা তখন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন। তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয় নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম শেখ ফজিলতুন্নেছা মুজিব শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবারটিই একটি মানবিক পরিবার। যারা সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন এ জাতিকে। মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, অসহায়ের প্রতি সংবেদনশীলতা শেখ পরিবারের ঐতিহ্য। শেখ হাসিনার সরকারের সময় দেশের সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে দারিদ্র্যতার শৃঙ্খল ভেঙেছে। উন্নয়নের বিস্ময় বাংলাদেশে অনেক বড় বড় প্রকল্প চলমান রয়েছে, বড় বড় ফ্লাইওভার করা হয়েছে, মেট্রোরেল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন স্থগিতের পর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা দূরদর্শী নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রকাশ, বহির্বিশ্বে আমাদের সম্মানযোগ। স্বচ্ছলতার পথে হাঁটছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
এফ এম শাহীন বলেন, আমরা বর্তমান সময়ে এমন একটা মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যেখানে দীর্ঘ দুই বছর ধরে আমরা এটাকে নিয়ে বসবাস করছি। পুরো পৃথিবী যখন একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একযোগে মহামারি থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজছে, ঠিক তখনেই যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস-কপ সম্মেলনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর উন্নত দেশের রাষ্ট্র নায়কদের বললেন- এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে হলে আমাদের ফান্ড তৈরি করতে হবে, আরও সোচ্চার হতে হবে। এই যে তিনি আজ এইসব কথা বলে বিশ্বনায়কে পরিণত হলেন, বিশ্বের বিপন্ন মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে তার হাতে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, একটি মানবিক বাংলাদেশ, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং একটি সমৃদ্ধশালি দেশে রূপান্তরিত হবে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান তার সারাটি জীবন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে একটি বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, খুদা-দারিদ্র মুক্ত একটি সমৃদ্ধশালি দেশ গড়তে চেয়েছিলেন ঠিক তার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা। মেধা মনন, সততা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও তিনি অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক। অর্থাৎ নিজে কর্মগুণে শেখ হাসিনা আজকে বিশ্বনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। শুধু বাংলাদেশ নয় তিনি নিজেকে এখন বিশ্ব নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতায় রূপান্তর করেছেন। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে বিশ্বের বৃহৎ ও প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক শক্তিগুলো ম্রিয়মাণ সেখানেও বাংলাদেশ উজ্জ্বল, দীপ্ত পথযাত্রায় নান্দনিক ভাস্কর। বিশ্ব অর্থনীতিতে এগিয়ে চলা পাঁচটি দেশের মাঝে একটি। বর্তমান অবস্থানে যা বিশ্বের ৪১তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। শুধু তা-ই নয়, মাথাপিছু আয়ও উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ১২ বছর পূর্বে যেখানে দেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ থেকে ৭০০-এর ঘরে সেখানে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০ ডলার অতিক্রম করেছে। আরেকটি প্রত্যাশা থাকবে যে বাঙালির যে সংস্কৃতিগুলো আজকে প্রায় বিলুপ্ত সেটাকে আবার সামনের দিকে আনতে হবে।