এক মামলায় আপিল বিভাগের রায়ের পর এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি-বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনেন ওই দণ্ডিত ব্যক্তির আইনজীবী। পরে আদালত ওই কথা বলেন।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন একটি মামলা মেনশন করার কথা বলেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, হ্যাংগিংয়ের (ফাঁসি) মামলা নিয়ে কত সমালোচনা হচ্ছে। ২০০৬ সালের মামলা শুনতে লিস্টে নিয়ে এসেছি। ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালের মামলাগুলোর পর ২০১৫ সালেরগুলো প্রায় শেষ করেছিলাম। এখন দেখা যায়, ২০১৩ সালের কিছু বাকি রয়েছে।
আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, গত ১৮ আগস্ট আপিল বিভাগ শুকুর আলীকে ফাঁসি দিয়ে রায় দেয়। রায়ে তিনজনকে ফাঁসি থেকে যাবজ্জীবন সাজা এবং শুকুর আলীর ফাঁসি বহাল রাখে।
তিনি বলেন, এ রায়ের অ্যাডভান্স কপি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে চলে যায়। জেল কর্তৃপক্ষ অ্যাডভান্স আদেশের কপি পেয়ে শুকুর আলীর দণ্ড কার্যকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
আইনজীবী বলেন, এ খবর শুনে শুকুর আলীর পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি এ মামলার রিভিউ ফাইল করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি। কিন্তু আমার ওকালতনামা পেতে দেরি হয়। যে কারণে আমি আজকে আপিল বিভাগের আবেদন করি। আবেদনে আমি আদালতকে বলেছি রিভিউ ফাইল না করা পর্যন্ত যাতে ফাঁসি কার্যকর না করে। মহামান্য আদালত আমার আবেদন গ্রহণ করেছেন এবং এ বিষয়ে আবেদন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছেন, তিনি যেন আইজি প্রিজনকে বলে দেন ফাঁসি দণ্ডটি যাতে স্থগিত থাকে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগেই ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি আমি দেখি নাই।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে গত ১৮ আগস্ট এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছে আপিল বিভাগ।
২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামেওই কিশোরী প্রতিবেশীর বাড়িতে টেলিভিশন দেখে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা তাকে অপহরণ করে। এরপর লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাক ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে।
পরদিন কিশোরীর বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।
এ মামলার বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন।
আসামি পাঁচজন হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের শুকুর আলী, কামু ওরফে কামরুল, নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেন।