১৮৯ রান করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে দারুণ একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার জন্য। তবে সে জন্য প্রয়োজন ছিল অন্তত ১৩০ রানের মধ্যে ইংল্যান্ডকে আটকে রাখতে হবে। ইংলিশদের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ঠিকই, কিন্তু সেটা বড্ড অসময়ে। অর্থ্যাৎ, ঠিকই ইংল্যান্ড ১৩০ রান পার হয়েছে। ইয়ন মরগ্যানরা গিয়ে থেমেছে ১৭৯ রানে। মাত্র ১০ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পেলেও, সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো তারা।
শনিবার (৬ নভেম্বর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ওপেনার রেজা হেন্ডরিকসকে সাজঘরে পাঠান মইন আলী। ৮ বল খেলে মাত্র ২ রান করেন তিনি। তিনে আসা ফন ডার ডুসেনের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক। ২৭ বলে ৩৪ রান করে আদিল রশিদের শিকার হন তিনি।
এরপর অবশ্য ছড়ি ঘুরিয়েছেন ডুসেন-এইডেন মারক্রাম জুটি। ব্যাট হাতে ইংলিশ বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান তারা। তাদের ১০৩ রানের অপরাজিত জুটিতে বড় সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে ৯৪ রান করে ডুসেন। ২৫ বলে ৫২ রান করেন মারক্রাম। এ দুজনের তাণ্ডবে ১৮৯ রানের পাহাড় গড়ে প্রোটিয়ারা। তবে হিসাব সহজই ছিল ইংল্যান্ডের জন্য। সেমিফাইনালে যেতে ইংল্যান্ডকে ১৩১ রান করলেই হতো। আর সেমিতে যেতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার লাগতো ৬০ রানের জয়।
১৯০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ইংল্যান্ড। তবে ৪.১ ওভারে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন (রিটায়ার্ড হার্ট) জেসন রয়। ব্যাট করতে নামেন মইন আলী। জেসন ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৫ বলে ২০ রান করেন। ৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ড বিনা উইকেটে ৫০ রান তোলে।
৫.৩ ওভারে নরকিয়ার বলে বাভুমার হাতে ধরা পড়েন জস বাটলার। ৩টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ১৫ বলে ২৬ রান করে ক্রিজ ছাড়েন বাটলার। ইংল্যান্ড ৫৮ রানে এক উইকেট হারায়। ৬.২ ওভারে জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান শামসি। ৩ বলে এক রান করে এলবিডব্লিউ হন বেয়ারস্টো। ইংল্যান্ড ৫৯ রানে ২ উইকেট হারায়। ১২.২ ওভারে শামসির বলে মিলারের হাতে ধরা পড়েন মইন আলী। ৩টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৭ বলে ৩৭ রান করে আউট হন মইন। ইংল্যান্ড ১১০ রানে ৩ উইকেট হারায়।
শেষ চার ওভারে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪৬ রান। ব্যাটে ছিলেন লিভিংস্টোন ও মালান। ১৬.২ ওভারে চতুর্থ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। প্রিটোরিয়াসের বলে রাবাদার হাতে ধরা পড়েন ডেভিড মালান। আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৩ রান করেন তিনি। ক্রিজে আসেন মরগান। ১৮.১ ওভারে লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরান প্রিটোরিয়াস। একটি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১৭ বলে ২৮ রান করে মিলারের হাতে ধরা পড়েন লিয়াম।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। ক্রিজে ছিলেন মরগান ও ক্রিস ওকস। বোলিংয়ে আসেন কাগিসো রাবাদা। প্রথম বলেই ওকসকে ফেরান তিনি। ৩ বলে ৭ রান করেন ওকস। পরের বলেই মরগানকেও ফেরান রাবাদা। ১২ বলে ১৭ রান করে মহারাজার হাতে ক্যাচ তুলেন তিনি। এরপর হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রাবাদা। কোনও রান না করেই মিলারের হাতে ক্যাচ তুলেন ক্রিস জর্ডান। শেষ তিন বলে মাত্র ৩ রান নিতে পারে ইংল্যান্ড। ফলে ১০ রানে ম্যাচ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে জিতেও সেমিতে যাওয়া হয়নি তাদের। এই গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল খেলবে অস্ট্রোলিয়া ও ইংল্যান্ড।