জাতীয় চার নেতার আত্মত্যাগ বাঙালি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে: ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১, ১০:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জেল হত্যার নিহত চার নেতাকে স্মরণ করতে হলে যেমন বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করতে হয়, ঠিক তেমনি একইসাথে একাত্তরে সকল শহীদদের স্মরণ করতে হয়। কারণ এই সকল ঘটনাগুলো একইসূত্রে গাঁথা। তারা মূলত ভেবেছিল যে এই চার নেতা যদি জীবিত থাকে তাহলে তারা আবার নেতৃত্বে ফিরে আসতে পারে এবং ভবিষ্যতে এই বিশ্বস্ত সহচর আবার সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারে, এইজন্যই মূলত তারা আবার এই নিকৃষ্টতম হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস রচনা করে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫১৩তম পর্বে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যকে নির্মমভাবে শাহাদাতবরণ করার পর মাত্র আট দিন পর জাতীয় চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি এতটাই বিশ্বস্ত ছিলেন এবং এখান থেকে আমরা যারা তরুণ প্রজন্ম বেঁচে আছি আমাদের এখান থেকে অনেক কিছু শিখার আছে। এইরকম বিশ্বস্ত সহচর পৃথিবীর আর কোথাও কেউ হয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। এই চারজন নেতা কখনোই বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বেইমানি করেননি তাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। এই জন্যই পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা যেটাকে আমরা জেলখানা বলি সেখানেই এই চার নেতাকে সেই ১৫ আগস্টের মতো নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতা লাভের পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত চারজনই এমন সজ্জন ও নির্বিরোধ প্রকৃতির বিশিষ্ট ভদ্রলোক ছিলেন যে, তাদের সঙ্গে কারও শত্রুতার প্রশ্নই আসে না। তাদের মতো নির্দোষ প্রকৃতির ও অক্ষতিকর মানুষ রাজনীতিকদের মধ্যে কমই দেখা যায়। তাদের সরল জীবনযাপনও ছিল মুগ্ধ করার মতো। ভাষা আন্দোলন থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে শোষণবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় এই চার নেতা তখন থেকে সেই আন্দোলনের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা তাদের ছিল। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি হলে এই চার নেতাই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় চালিকাশক্তির ভূমিকায় ছিলেন। মোশতাকের সঙ্গে আপস-সমঝোতায় রাজি না হওয়ায় এই চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা মূলত ভেবেছিল যে এই চার নেতা যদি জীবিত থাকে তাহলে তারা আবার নেতৃত্বে ফিরে আসতে পারে এবং ভবিষ্যতে এই বিশ্বস্ত সহচর আবার সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারে, এইজন্যই মূলত তারা আবার এই নিকৃষ্টতম হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস রচনা করে।