সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
শিক্ষকদের কোন্দল, দুই বছরেও হয়নি এক সেমিস্টারের ফলাফল
জাককানইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১, ৮:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

শেষ হওয়ার কথা চার বছরের স্নাতক। কিন্তু এখনও দ্বিতীয় বর্ষেই আটকে আছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সঙ্কটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে শিক্ষকদের কোন্দল। এর ফলে দুই বছরেও হয়নি এক সেমিস্টারের ফলাফল

গেল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিলম্ব করেই শুরু হয়েছিলো শিক্ষাবর্ষটির দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা। যা শেষ হয় একই বছরের অক্টোবর মাসে। পরীক্ষা শেষের তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের বাধ্যবাধকাতা থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কাই করেনি বিভাগটি। বিভাগটির ৫টি শিক্ষাবর্ষের কোন ব্যচের সঙ্গেই মানা হয়নি এই নিয়ম। বছরের পর বছর আটকে থাকে বিভাগটির বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ফলাফল।

বিভাগটিতে সেশন জটের চিত্র ভয়াবহ। বর্তমানে দ্বিতীয় বর্ষে রয়েছে তিনটি শিক্ষাবর্ষের ১১১ জন শিক্ষার্থী।

ফলাফল প্রকাশের বিড়ম্বনায় শিক্ষার্থীরা বারবার বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে গেলেও কোন সমাধান পায়নি।

বিভাগটিতে শিক্ষকদের দুটি অংশের কোন্দলই সংকট বৃদ্ধি করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিভাগটির শিক্ষক নকিবুল হাসান খান ও আশরাফ সিদ্দিকীর দ্বন্দেই বিভাগটিতে সংকট বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের দিয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেওয়া থেকে শুরু করে সকল কাজেই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

তবে বিভাগে আতঙ্কের নাম নকিবুল হাসান খান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের দিয়ে অন্য শিক্ষকদের ফোন করিয়ে থাকেন তিনি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে চান ফোনের অপর প্রান্তে থাকা শিক্ষক কি বলেছেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের দিয়ে অন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও লিখিয়েছেন এই শিক্ষক। একই অভিযোগ রয়েছে বিভাগটির বর্তমান বিভাগ প্রধানের বিরুদ্ধেও।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তিন সেমিস্টার পরীক্ষায় একটি ল্যাব কোর্সের পরীক্ষা ছয় মাস পর নিয়েছিলেন নকিবুল হাসান। সেটিও আন্দোলনের মুখে পড়ে। পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন সময়মতো না করা, বিভাগের সভায় অংশ না নেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিভাগটিতে শিক্ষক দ্বন্দ এতটায় কঠিন যার চিত্র উঠে আসে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির দিকে তাকালে। যেখানে বিভাগটির একটি শিক্ষাবর্ষের  পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোদ উপাচার্যকে। সে সময় বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ সিদ্দিকী ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফ কে সায়মা তানজিয়া। ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন অবস্থায় পরিবর্তন করেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নাম। যেখানে ড. আশরাফ সিদ্দিকীর পরিবর্তে প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য। 

এই নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগটির শিক্ষক এফ কে সায়মা তানজিয়া বলেন, ‘আমি কিছু করিনি। ভিসি স্যারই সব করেছে।’ আর অভ্যন্তরীন কোন্দলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে কথা তুলতেই উত্তপ্ত হয়ে যান এই শিক্ষাক। বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয় পাবলিক করার কি আছে? ফোন রাখেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাই এটা।’

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল প্রকাশেও অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে নকিবুল হাসান খানের বিরুদ্ধে। এমনকি উপাচার্য দায়িত্ব নিয়েও কাজ করাতে পারেননি তাকে দিয়ে।

কমিটিতে নকিবুল ইসলামের অসহযোগিতার কথাও স্বীকার করেছেন আরেক শিক্ষক এস বিপুলেন্দু বসাক। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জায়গায় সবটা দিয়ে চেষ্টা করি। সকলের সহযোগিতা পেলেই কেবল সম্ভব এই সমস্যার সমাধান। কেউ একজন অসহযোগিতা করলেই আটকে যায় সকল কাজ।’

একাধিক অভিযোগের বিষয়ে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মো. নকিবুল হাসান খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল এবং ক্ষুদেবার্তা দিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিভাগটির প্রধান ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। আমার একার দায় না। আমাকে কেউ সহযোগিতা করেনা। মিটিং ডাকলে নকিব সাহেব, তানজিয়া ম্যাডাম আসেন না।’ তিনি বলেন, ‘আমি বলার পরেও ইচ্ছে করে আসেনা। সভায় আসবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন নকিব সাহেব।’ এসব বিষয়ে কথা উঠলে নকিবুল ইসলাম পরে অস্বীকার করেন বলে এসব কথার কল রেকর্ড সংরক্ষিত করে রেখেছেন বলেও জানান বিভাগীয় প্রধান।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ছুটিতে থাকা অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আমাকে বাদ দিয়ে উপাচার্য স্যারকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করেছেন। এটা কোন কথা? একটা বিভাগের একটা ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হতে হয় ভিসি স্যারকে? বাকিটা আপনারা বুঝে নিন।’

ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হবার কারণ নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হালিম বলেন, ‘বিভাগটির অভ্যন্তরীন সমস্যার কারণে বিলম্ব হয়েছে। আমাদের এখানে কিছু করার নেই। আমাদের থেকে যা সমস্যা ছিলো তা অনেক আগেই সমাধান হয়ে গেছে।’

তবে বিভাগটির ফলাফল প্রকাশ নিয়ে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। তবে দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানান উপাচার্য।



ভোরের পাতা/কে 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]