প্রকাশ: সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৫৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করতে পেরেছি। সুন্দরবন অঞ্চলে আর দস্যুবৃত্তি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপাল ডিগ্রি কলেজ মাঠে র্যাব আয়োজিত সুন্দরবন দস্যুমুক্ত দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ এলাকায় র্যাবের একটি স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। যাতে এই অঞ্চলে নতুন করে আর বনদস্যু তৈরি বা যারা আত্মসমর্পণ করেছে তারা পূর্বের পেশায় ফিরে যেতে না পারে। একই সাথে কোস্টগার্ডকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমি বাগেরহাটে এসেই শুনেছি, বিশ্বাস করিনি। শুনেছি কেউ কেউ আবার বিপথে যাবার চেষ্টা করছেন। কষ্ট করছেন জানি। কিন্তু ভুলেও সে চেষ্টা পুনরায় করবেন না।
দস্যুতা থেকে যারা ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে। তবে যদি কেউ আবারো দস্যুতায় ফিরে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া আপনাদের সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই গতি একটু ধীর। কিন্তু দয়া করে আপনারা অন্য কোনো চিন্তা করবেন না। কেউ যদি আবারো দস্যুতায় ফিরে যান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এক সময় সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালী ও মৌয়ালরা বনদস্যুদের হাতে জিম্মি এবং প্রায়ই বনদস্যুদের হাতে তাদের জীবন হারাতে হতো। দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে।
র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পীর ফজলুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ, খুলান বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে র্যাব-৬ ও র্যাব-৮ এর অধিনায়কগন, বাগেরহাট জেলাসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং উপকার ভোগী পুনর্বাসন সহায়তাপ্রাপ্ত ৩শ ২৬ জন সাবেক বন ও জলদস্যু উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের ১০২টি ঘর, ৯০টি মুদি দোকান (মালামালসহ), ১২টি জাল ও মাছ ধরার নৌকা, ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং গবাদিপশু হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে র্যাব মহাপরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে জলদস্যু দমনে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। একের পর এক র্যাব এর অভিযানে ফেরারি জীবনের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। এ পর্যন্ত সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৩৮ জন দস্যু নিহত হয়। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন।
ভোরের পাতা/কে