সীমাহীন বিদ্যু্ৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার সাধারণ মানুষের জীবন। লাগাতার লোডশেডিং এবং লো-ভোল্টেজের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
বিশেষ করে এতে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে ত্রিশাল পৌরসভার ১ ও ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
দিনের এক তৃতীয়াংশ সময়ই থাকছে না বিদ্যুৎ। তাই বিঘ্ন ঘটছে লেখা-পড়ায়, ক্ষতিগ্ৰস্থ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিন-রাত মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৮-১০ ঘন্টা লোডশেডিং হয়। যেটুকু সময় বিদ্যুৎ থাকে তাতেও দেখা যায় লো-ভোল্টেজ। মাঝেমধ্যেই ঘোষণা দিয়ে, আবার অনেক সময় ঘোষণা ছাড়াই সঞ্চালন লাইন সংস্কারের নামে সারা দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ।
১৭ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে সারাদিন বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাখায় ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পর টানা ১ ঘন্টা ঢাকা- মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
এতে মহাসড়কের দু'পাশে প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পৌরসাভার মেয়র, জাককানইবির প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা।
তারা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে মহাসড়ক থেকে অবরোধ উঠিয়ে নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর টানা দু'দিন পেরিয়ে গেলেও সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জল কুমার প্রধান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের নির্দেশনা ক্রমে বিদ্যুত সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়ে কিভাবে সমস্যাটি খুব দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের একটু ধৈর্য ধরার জন্য আমি আহ্ববান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জাককানইবির ছাত্র পরামর্শক ও উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার বলেন, বাংলাদেশের কোন যায়গায় এমন বিদ্যুৎ সমস্যা নেই। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে কষ্ট হচ্ছে, তারা গরমে থাকতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সুরাহার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সংস্কার কার্যক্রমের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাউবি) এর ত্রিশাল শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার মো. ফারুক হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ লাইনের সংস্কার কার্যক্রম চলছে, তাই মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ রাখতে হয়। আশা করি আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে সমস্যাটি সমাধান হবে।
তবে সরেজমিনে পরিদর্শন করে কোন ধরণের সংস্কার কাজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের দাবি, লাগাতার লোডশেডিংয়ের বিষয়টি পরিকল্পতি এবং ইচ্ছাকৃতভাবেই শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে।
ভোরের পাতা/অ