দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মবালম্বীদের উপাসনালয়, বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদস্যসচিব মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেছেন, কুমিল্লায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা এবং উৎসবের সময় এবং এর জের ধরে পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ঘটনা ঘটেছে, তা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরীত। একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী সম্প্রীতি ও বাঙালি সংস্কৃতির বহুত্ববাদকে চ্যালেঞ্জ করতে চাইছে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ মনে করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক দর্শন বিনষ্ট করার এ এক পুরনো ষড়যন্ত্র। এ যেন নতুন বোতলে পুরনো নেশাদ্রব্য। দেশের পবিত্র সংবিধানে লিপিবদ্ধ অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আঘাত সম্মিলিতভাবে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ। সম্প্রীতি বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ষড়যন্ত্রকারী দুর্বৃত্তের সংখ্যা বেশি নয় এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই পারে এ অপকর্ম রুখে দিতে। এ দেশের অতীত অভিজ্ঞতা সেটাই প্রমাণ করেছে।
ভুলে গেলে চলবে না যে জাতির পিতার আহ্বানে মহান একাত্তরে দেশের মুসুলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলে। সকল ধর্মবিশ্বাসী বাঙালির মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে চিরতরে রুখে দেওয়ার জন্য সরকারের পাশাপাশি সকল মানুষ বিশেষ করে যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
একই সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাবলীকে উপজীব্য করে যারা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের চিরায়ত ভাবমূর্তি বিনষ্টের চেষ্টা করছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক এবং সোচ্চার হবার আহ্বান জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আরমা দত্ত (এমপি), মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), ডা. কামরুল হাসান খান, আ ব ম ফারুক, মেজর জেনারেল জন গোমেজ (অব.), অশোক বড়ুয়া, এ কে এম আতিকুর রহমান, মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, ডা. উত্তম কুমার বড়ুযা, ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, ডা. নুজহাত চৌধুরী, মিহির কান্তি ঘোষাল, অধ্যাপক অসীম কুমার সরকার, অধ্যাপক বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, তাপস হালদার, সলিমউল্লাহ সেলিম, বরুণ ভৌমিক নয়ন, কল্যাণ সাহা, শামসুল আলম সেতু, সিদ্দিকুর রহমান, কুদ্দুস আফ্রাদ, আশরাফ আলী, সাইফ আহমেদ, বিপ্লব পাল, অনয় মুখার্জী, শফিক রেঞ্জার, আনিসুজ্জামান মানিক, অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার প্রমুখ।