প্রকাশ: রোববার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৩২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজ যদি রাসেল ভাই বেঁচে থাকতো তাহলে এই দেশের হাল তিনিও ধরতেন। শেখ হাসিনার পাশাপাশি তিনিও এই দেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখতেন। তারা শেখ রাসেলকে একবার মারেননি, কয়েক বার মেরেছে। শেখ রাসেল যখন বলেছিল আমি আমার মায়ের কাছে যাবো তখন খুনিরা রাসেলকে মায়ের কাছে নেওয়ার নাম করেই হত্যা করে। রাসেল এতো ছোট বয়সে এতো মেধাবী ছিল যে বঙ্গবন্ধু যখন কোন গল্প বা কাহিনী বলতো তখন সে হুবুহু সেইভাবেই সেটা বলে দিতে পারতো। শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র ছিল এবং বরাবরই তার রোল ১ ছিল। এখনো তার সহপাঠীরা যারা বেঁচে আছেন তারা শেখ রাসেলকে নিয়ে এখনো স্মৃতিচারণ করেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৯৫তম পর্বে রোববার (১৭ অক্টোবর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা আফছার খান সাদেক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
আফছার খান সাদেক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন ১৮ অক্টোবর। আজ যদি রাসেল ভাই বেঁচে থাকতো তাহলে এই দেশের হাল তিনিও ধরতেন। শেখ হাসিনার পাশাপাশি তিনিও এই দেশের অগ্রগতিতে হাত রাখতেন। তারা শেখ রাসেলকে একবার মারেননি, কয়েক বার মেরেছে তারা। শেখ রাসেল যখন বলেছিল আমি আমার মায়ের কাছে যাবো তখন খুনিরা রাসেল সাহেব মায়ের কাছে নেওয়ার নাম করেই হত্যা করে। মাত্র ১০ বছর ৯ মাস ২৭ দিনের স্বল্পায়ু জীবন ছিল তার। এতোগুলো লাসের মধ্যে দিয়ে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া এটা ছিল একটা মর্মান্তিক মৃত্যু। যখন শেখ রাসেল বলেছিল আমি আমার হাসু আপার কাছে যাবো তখন ছিল আরেকটা মৃত্যু। এতোগুলো মৃত্যু পারি দিয়ে এই নরপিচাসরা যে কাজ করে এই বাঙলার ভূখণ্ডে আল্লাহ তাদেরকে সেই সাজা দিয়েছেন। এই হত্যাকারীদের মধ্যে যারা এখনো বেঁচে আছেন তাদের সকলেরই শাস্তি হওয়া উচিৎ। এমন মর্মান্তিক খুন দুনিয়ার কোন দেশে হয়নি। রাসেল পিতার সান্নিধ্য বেশি না পেলেও যখন পেতেন তখনই পিতাকে সবসময় অনুকরণ ও অনুসরণ করতেন। পিতার জামা-জুতা হাঁটার স্টাইল সব কিছুই অনুকরণ করতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় পোশাক ছিল লুঙ্গি ও গেঞ্জি। সেজন্য রাসেলেরও ছোট লুঙ্গি ছিল। বঙ্গবন্ধুর চশমাটা মাঝে মাঝে নিজের চোখে নিয়ে মজা করত। রাসেল ছিল খুবেই চঞ্চল প্রকৃতির। সারা বাড়ি মাথায় তুলে রাখত। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা হারিয়েছেন আদরের প্রিয় ছোট ভাইকে আর বাংলাদেশ হারিয়েছিল একজন সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান সন্তানকে। শেখ রাসেল আজ প্রতিটি শিশু-কিশোর তরুণদের কাছে ভালোবাসার নাম। একটি নিষ্পাপ শিশু হিসেবেই চিরকাল ইতিহাসে থাকবে। মানবিক চেতনা বোধ সম্পন্ন মানুষরা শহীদ শেখ রাসেলের বেদনার কথা হৃদয়ে ধারণ করে চিরদিন শিশুদের জন্য কাজ করে যাবে। ইতিহাসের মহাশিশু হয়েই বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। আজ যদি রাসেল ভাই বেঁচে তাহলে তার বয়স পঞ্চান্ন বছর হতো। রাসেল ভাই আমাদের হাল ধরতো, রাসেল ভাই আমাদের এমপি হতো। আজ রাসেল ভাই নেই কিন্তু তার অনেক বন্ধু বান্ধব আছে যারা এখন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য আছে। অনেকেই রাসেল ভাইকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছে। রাসেল ভাই এখনো মারা যাননি, শেখ রাসেল আমাদের স্মৃতিতে চির অম্লান হয়ে থাকবে।