রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, রেলে যাত্রীদের নিরাপদে যাতায়াত নিশ্চিত করতে ট্রেনের ছাদে যাত্রী বা ভাসমান লোকজন ওঠা বন্ধ হয়েছে। রেল সম্পর্কে বর্তমানে মানুষের একটি ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের এ ধারণা আমরা ধরে রাখতে চাই। রেলওয়ের সেবার মান বাড়িয়ে ট্রেনকে একটি জনবান্ধব পরিবহনে রূপ দেবো।
রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে রেলওয়ের নেওয়া ব্যবস্থা এবং রেলওয়ের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রেলওয়ে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রেলওয়েতে আগে হয়তো দুর্নীতি ছিল। এখন যে আমরা ধোয়া তুলসিপাতা হয়েছে গেছি, তা মনে করি না। তবে চেষ্টা করছি দুর্নীতিমুক্ত একটি রেলওয়ে গড়ে তোলার। ব্যক্তিগতভাবে আমি এ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমার সঙ্গে যারা কাজ করছেন, তারা প্রত্যেকেই চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বাস করি। তবে সাংবাদিকদের কাছে দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যপ্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
রেলমন্ত্রী বলেন, চলন্ত রেলে পাথর নিক্ষেপ একটি ভয়াবহ সমস্যা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে ১১০ টি চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
এতে ট্রেনের জালানার গ্লাস ভেঙেছে ১০৩ টি। আহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন যাত্রী। এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ডসহ উন্নত দেশগুলােতেও ঘটছে। এতে ট্রেনের যাত্রী এবং কর্মীরা আহত হচ্ছেন।
এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে চাই। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপরােধে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে চাই।
চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চারটি জেলার পাঁচটি জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকাগুলো হলো, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, সীতাকুণ্ড -বাড়বকুণ্ড, ফেনীর ফাজিলপুর-কালীদহ, নরসিংদী, জিনারদী ও ঘােড়াশাল এলাকা।
পশ্চিমাঞ্চলে চুয়াডাঙ্গা আউটার, নাটোরের আব্দুলপুর রেলওয়ে স্টেশন, সিরাজগঞ্জের শহীদ এস মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশন, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশন, পাবনার মুলাডুলি রেলওয়ে স্টেশন, পঞ্চগড়ের কিসমত, ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া, পাবনার ভাঙ্গুরা রেলওয়ে স্টেশন, বগুড়ার ভেলুরপাড়া রেলওয়ে স্টেশন, গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন, জয়পুরহাটেরর আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশন, সিরারগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন, সিরাজগঞ্জ জেলার সলপ রেলওয়ে স্টেশন, জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন, পাবনার বড়ালব্রিজ রেলওয়ে স্টেশন, খুলনার ফুলতলা রেলওয়ে স্টেশন এলাকা। এসব এলাকায় এরই মধ্যে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপরােধে বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।