প্রকাশ: শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১, ৮:৪৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
কুয়াকাটায় বৈশাখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নদী কিংবা বঙ্গোপসাগরে ইলিশ পাওয়া গেলে ও জোষ্ট, আষার, শ্রাবন ও ভাদ্র মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম ধরা হয় মৎস্য অধিদপ্তরে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইলিশ মৌসুম শুরু হয়েছে ১ জুলাই থেকে কিন্তু ২১ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫দিন মা ইলিশের নিবিঘ্ন প্রজননের জন্য ৪ অক্টোম্ববর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন সহ মোট ৮৭দিন জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হয় জেলেদের।
এরপর জাটকা সংরক্ষনের জন্য ছয় মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। রয়েছে বৈরি আবহাওয়ার প্রভাব। ফলে বছরের অর্ধেকটা সময় জেলেদের ঘাটে বসে কাটাতে হয় সময়। উপকুলের জেলেরা সাধারনত ইলিশ মৌসুমের আপেক্ষায় থাকে। ইলিশ শিকারে টানা ২২দিনের নিষেধাজ্ঞা আগামী ৪ অক্টোম্ববর থেকে ২৫ অক্টোম্ববর।
মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে আশ্বিনের অমাবশ্যা ও পুর্নিমা মাঝে রেখে গত কয়েক বছর এ পদক্ষেপ নিচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তর। আশ্বিনের অমাবশ্যায় পানি বাড়লে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সাগর ছেড়ে মিঠাপানির দিকে ছুটতে থাকে। কিন্ত প্রায় আড়াই মাস আগে ইলিশ মৌসুম শুরু হলেও নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ পাচ্ছেন না সাগরে। প্রতিটি অমাবস্যা পুর্ণিমায় জেলেরা আশায় বুক বাঁতেন এই ভেবে যে পানির চাপের সঙ্গে নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আসবে। এই বিশ্বাস ছিল জেলেরদের। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবত সে আশা পুরন হচ্ছেনা। সে আশা থেকে গেলো। এখন শেষে পথে ইলিশ মৌসুম।
গত বছরের তুলনায় এবার অর্ধেক পরিমানও ইলিশ পায়নি জেলেরা। ফলে ইলিশ নিয়ে এখন উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে জেলে পরিবারে। কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় গভীর পানির সন্ধানে ইলিশের গতিপথও পরিবর্তনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সাগরের যেতে তৎসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারনে সাগরে মাছ ধরার জন্য যেতে পারেনি জেলেরা। এ বছর বারবার তৎসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি। এরই মধ্যে আবার ২২দিনের নিষেধাজ্ঞা। দেশের মোট ইলিশের দুই তৃতীয়াংশ আহরিত হয় বরিশাল বিভাগের দক্ষিনা লের নদ-নদী ও সাগর থেকে। গত তিন বছর মোটামুটি ইলিশ পাওয়ার পর এবছর কোথায় গেলে ইলিশ এ প্রশ্নের উওর পাওয়া মুশকিল।
জেলে কামরুল হাসান জানান , জুলায়ের শুরু থেকেই দফায় দফায় নিম্ন চাপ ও লঘুচাগে সাগর উওাল থাকায় জেলেরা ইলিশ ধরতে তেমন সুবিধা হয়নি। আর যে টুকু পাওয়া গেছে তা আবার জাটকা ইলিশ।
ট্রলার মালিক হাজী আক্তার হোসেন গাজী বলেন, গত বছর মাঝী মাল্লাদের বেতন দিয়ে কোনো রকম ইলিশের ব্যবসা করেছিল কিন্তু এ বছর অবস্থা খুবই খারাপ গদি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা পাওনা এ টাকা কি দিয়ে শোধ করবো তা এখন চিন্তিত আছি। গত বছর একটা ট্রলারে ২৫লক্ষ টাকা বিক্রি করেছে এ বছর সেখানে সাত লক্ষ টাকা বিক্রি করছি।
পটুয়াখালীর জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদ উল্লাহ বলেন, গত নভেম্ববর থেকে মে মাস পর্যন্ত ৭ মাস এক বারে বৃষ্টিপাত হয় নাই। এজন্য ইলিশ মাছ পড়ার প্রভাবটা কম। তাছাড়া বৃষ্টি হলে মাছের পেটে ডিম আসে। মোহনা সংলগ্ন রাঙ্গাবালীর সোনারচর ও ভোলার ডালীর চর পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারনে মাছের সংখ্যা কমে গেছে।
ভোরের পাতা/কে