গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন: মে. জে. (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার
প্রকাশ: শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সারা পৃথিবীতে যে সরকারগুলো রয়েছে সেখানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার চালানোর জন্য নির্বাচনের বিকল্প কিছু নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষমতায় আসলেন তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে তাঁর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করার চেষ্টা করা হলো সেটা ছিল এন্ট্রি গণতান্ত্রিক ও পাকিস্তানি কায়দায় তৈরি একটা প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান এবং একটা রাষ্ট্র যে সব প্রতিষ্ঠানের উপরে অর্থাৎ খুঁটি হিসেবে যেসকল প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রকে ধরে রাখে বা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ধরে রাখে তার অন্যতম একটি খুঁটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি তার নিজস্ব স্বার্থে বা কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শে এমন কোন কথা বলা উচিৎ নয়, যাতে রাষ্ট্রের এই অন্যতম খুঁটি যাতে কোনভাবেই দুর্বল না হয়।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪৭৯তম পর্বে শুক্রবার (১ অক্টোবর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালি-উর রহমান, পিএসসি, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গবেষক ও লেখক মে. জে. (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
মে. জে. (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, আজকে ভোরের পাতা সংলাপের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান এবং একটা রাষ্ট্র যে সব প্রতিষ্ঠানের উপরে অর্থাৎ খুঁটি হিসেবে যেসকল প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রকে ধরে রাখে বা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ধরে রাখে তার অন্যতম একটি খুঁটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি তার নিজস্ব স্বার্থে বা তার রাজনৈতিক দলের আদর্শে এমন কোন কথা বলা উচিৎ নয় যাতে রাষ্ট্রের এই অন্যতম খুঁটি যাতে কোন ভাবেই দুর্বল না হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে দুইজন সামরিক শাসক বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছিল। সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বলতে যা বুঝায় তারা সব কিছুই ধ্বংস করে ফেলেছিল। তারা সংবিধান ধ্বংস করেছে যা একটা রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। সংবিধান হচ্ছে একটা রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আইন, সংবিধানের উপর রাষ্ট্র চলবে এবং যে সংবিধান ১৯৭২ সালের বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়ে তৈরি হয়েছিল সেই সংবিধান এখনো এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে যদি বিশ্বের অন্যান্য যেসব শক্তিশালী দেশ রয়েছে সেসব দেশের সংবিধানের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাহলে আমি আমার ক্ষুদ্রতম জ্ঞানের ধারা বলতে পারি সেগুলোর তুলনায় আমাদের সংবিধান কোন অংশে খাটো নয় বরং সমানে সমান। সেই সংবিধান অনুযায়ী যদি বাংলাদেশ পরিচালিত হতো তাহলে কিন্তু আজকের এই সংলাপের যে বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে সেই বিষয়টির কোন প্রয়োজন ছিল না। প্রক্রিয়া দিয়ে যাওয়া এই সংবিধানটি আমি শুরুতে যে দুই সামরিক শাসকের কথা বললাম তারা তাদের শাসনামলে এই সংবিধান একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এখন এই দুই সামরিক শাসক যেভাবে সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল এবং সেটা গঠনের ফলে যেসকল রাজনৈতিক শক্তি সুবিধা ভোগ করে ক্ষমতায় যেতে পেরেছে তারা কিন্তু এখনো সেটায় চায়। অর্থাৎ তারা যদি ক্ষমতায় যেতে পারে তাহলে সেটা ঠিক আছে আর যদি ক্ষমতায় যেতে না পারে তাহলে সেটা আর ঠিক নেই বলে দেয়।