প্রকাশ: সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:২৭ পিএম আপডেট: ২৮.০৯.২০২১ ৬:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
দেশের আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব)। এক দশক পর এবার ভোট হতে যাচ্ছে। প্রভাবশালী এই সংগঠনের ঘরে বসে নেতা নির্বাচনের বদলে এবার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব ঠিক হবে। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবাসিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি সদস্যদের মাঝেই নির্বাচনীয় আমেজ দেখা গেছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটের আমেজ ততই বাড়ছে। প্রচার প্রচারণায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। চলছে নানা আলোচনা। সব প্রার্থীরাই ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণায় চালাচ্ছেন। সবারই দাবী সুষ্ট ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। গত রোববার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্ট নির্বাচনী আলোচনা হয়েছে। এতে সভাপত্বিত করেন, রিহ্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান এবং অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ঐশী প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী।
অনুষ্ঠানে করোনাকালীন সময়ে আবাসন খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। তবে আগামী ১০ নভেম্বর রিহ্যাবের দ্বিবার্ষিক সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, প্রায় এক দশক ধরে নির্বাচন হচ্ছে না রিহ্যাবের। তাই এই নির্বাচনটি হতে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। গত সাত বছরে ধারাবাহিকভাবে অনির্বাচিত রিহ্যাব বোর্ড সদস্যদের প্রত্যাশা পূরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখেন ঐশী প্রোপারটিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, পরপর তিনবার স্বঘোষিত ও অনির্বাচিত বোর্ডের পরিবর্তন সময়ের দাবি। করোনাকালীন অর্থনৈতিক মন্দা উত্তরণে তথা আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য কার্যকর দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে নাই। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য আবাসন খাতে একটি ডাইনামিক বোর্ড প্রয়োজন। যে বোর্ড সরকারের সাথে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আবাসন ব্যবসায়ীদের সমস্যা উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। আমি অর্থনৈতিক মন্দা থেকে করোনাকালীন সময়ে আবাসন খাতের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রণোদনা তহবিলের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। রিহ্যাবের বর্তমান বোর্ড আবাসন ব্যবসায়ীদের জন্য অনুকূল কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। এছাড়া রিহ্যাবের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিহ্যাবের সভাপতি বরাবর চিঠি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রিহ্যাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৯ জন সদস্যকে বহিষ্কারের জন্য নোটিশ প্রদান করে । চারজন সদস্যকে রিহ্যাব থেকে বহিষ্কার করে অনৈক্যের সৃষ্টি করেছে। আগামী নির্বাচনের নতুন কমিটির মাধ্যমে সদস্য বান্ধব এবং ব্যবসা-বান্ধব নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য। আমি নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডাইনামিক এবং সদস্য বান্ধব বোর্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
রিহ্যাব থেকে জানা গেছে, এ নির্বাচনের মাধ্যমে ২১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি নির্বাচিত হবে। নির্বাচিত কমিটি দুই বছরের জন্য রিহ্যাবের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবে। পরিচালনা পর্ষদ রিহ্যাবের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সম্প্রতি রিহ্যাব নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এনায়েতুর রহমান ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন। ১০ নভেম্বর আসন্ন নির্বাচন ঘিরে আবাসিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। রিহ্যাব সদস্য ২০০৮ সালে নির্বাচিত রিহ্যাব নেতা নাসির উদ্দিন বলেন, এতোদিন সিলেকশনে কমিটি হয়েছে। এভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন হলে এক ধরনের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তৈরি হয়। এবার ভোটের ঘোষণা আসলেই উৎসবে আমেজ তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে রিহ্যাবের ভেতরে দুটি শক্তিশালী উপদল তৈরি হয়। শামসুল আলামিন কাজলের রিহ্যাবের বর্তমান কমিটির নেতারা আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বিরোধী পক্ষে নির্বাচনে নামছেন রবিউল, ওয়াহিদুজ্জামান এবং শামিম রেজার নেতৃত্বাধীন অংশটি। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ আসন্ন নির্বাচনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।
এই দুই পক্ষ আগামী ১০ নভেম্বর ২৭ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন। রিহ্যাবের বর্তমান নেতৃত্বের পক্ষে সোহেল রানা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষে মাঠে কাজ শুরু করে দিয়েছেন বহিষ্কৃত তিন সদস্য সাইদুল ইসলাম বাদল, অবসরপ্রাপ্ত কমোডর শহিদ, দিপ্তি শামিম। বিদ্রোহী নেতাদের অন্যতম আইয়ুব আলী রয়েছেন। তাকে বহিষ্কার করে পরে আদেশ প্রত্যাহারের পর তিনি বিদ্রোহীদের সংগঠিত করছেন।